—ফাইল চিত্র।
ব্যবসায়ীদের যে যেমন পারছেন, রাস্তার উপরে এগিয়ে আনছেন দোকান। তাতে বাজারের সরু রাস্তা আরও সঙ্কীর্ণ হয়েছে। কোথাও ঘিঞ্জি রাস্তা দমকলের গাড়ি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। শহরের দু’টি বড় কাপড়ের হাটে অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা ‘সন্তোষজনক’ বলে দমকল জানালেও শহরের বাকি অংশে সঙ্কীর্ণ রাস্তা, জলাশয়ের অভাব, ব্যবসায়ীদের রাস্তায় পসরা সাজিয়ে বসা— অগ্নিকাণ্ডের মতো বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে অদ্বৈতভূমিতে চিন্তা বাড়ছেই।
একে পুরনো শহর। তায় আগের তুলনায় জনবসতি বেড়েছে অনেক। বাড়িঘরের পাশাপাশি বেড়েছে দোকানপাটের সংখ্যাও। অভিযোগ, ব্যবসায়ীদের একাংশ জিনিসপত্র থেকে শুরু করে দোকানের একাংশও চলে এসেছে রাস্তায়। শান্তিপুরের অন্যতম ব্যস্ত বাজার বড়বাজার এলাকা যেমন। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, এখানে রাস্তা যেমন সঙ্কীর্ণ তেমনই দোকানের একাংশও অনেক জায়গায় রাস্তায় চলে এসেছে। আবার রাস্তাতেও অনেক দোকানের জিনিসপত্র রাখা। ফলে বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে দমকলের গাড়ি প্রবেশে সমস্যা রয়েছেই। আবার সারি দিয়ে সেখানে দোকান। বড়বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক প্রসেনজিৎ সেন বলেন, “অনেকবারই আমরা ব্যবসায়ীদের বলেছি রাস্তার জন্য জায়গা রাখতে। অনেকবার শোকজও করা হয়েছে। তবে সবাই এ রকম নন। অনেকেই নিয়ম মেনে চলেন।”
শান্তিপুরে একাধিক বাজার রয়েছে। অনেক জায়গাতেই দোকানপাটের পাশাপাশি সঙ্কীর্ণ পথ চিন্তা বাড়াচ্ছে। এই শহরে একাধিক হাটও রয়েছে। সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে এই হাট বসে। তবে শান্তিপুরের দু’টি বড় কাপড়ের হাটে অগ্নি নির্বাপণের ক্ষেত্রে যা ব্যবস্থা আছে তা ‘সন্তোষজনক’ বলে জানাচ্ছেন দমকল। তবে সেখানে হাজার খানেক বিক্রেতাদের পাশাপাশি কয়েক হাজার ক্রেতা জড়ো হন বিভিন্ন জায়গা থেকে। সেখানে জলাধার থেকে শুরু করে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা, ‘ইমার্জেন্সি এক্সিট’-এর ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। রাখা হয়েছে আলাদা সিঁড়িও। শান্তিপুরের একটি কাপড়ের হাটের মালিক তৃণমূল কাউন্সিলর বিভাস ঘোষের দাবি, “আমাদের হাটে জলাধারে প্রায় ৫০ হাজার লিটারের মত জল ধরে। আরো ৬০ হাজার লিটার বৃদ্ধি করা হচ্ছে। একাধিক সিঁড়ি, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা রেখেছি।”
২০০৫ সাল নাগাদ শান্তিপুরে দমকল কেন্দ্র চালু হয়। কিন্তু পুরনো শহরে সঙ্কীর্ণ রাস্তা দমকলের গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা। অগ্নি নির্বাপণের জন্য শান্তিপুর দমকল কেন্দ্রে দু’টি গাড়ি আছে। এর মধ্যে বড় গাড়ির ক্ষমতা ১২ হাজার লিটার, ছোট গাড়ির ক্ষমতা ৮ হাজার লিটার জল বহনের। রয়েছে আর একটি ছোট গাড়ি।
কিন্তু শহরের সর্বত্র যে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা মসৃণ নয়, তা জানাচ্ছেন পুরবাসীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, সঙ্কীর্ণ রাস্তার পাশাপাশি শহরের বুকে পর্যাপ্ত জলাশয়ের অভাবও রয়েছে। বড়বাজারের কাছে, নতুনহাটের কাছে এ রকম কিছু জায়গায় জলাশয় থাকলেও তা যথেষ্ট নয়।