সন্তানের সঙ্গে শ্রীকান্ত। নিজস্ব চিত্র
সারাদিন টোটোর হ্যান্ডল ধরেই কেটে যেত তাঁর। দিনভর টোটো চালাতেন বড়ঞার শ্রীকান্ত আচার্য। দিনের শেষে তিন থেকে চারশো টাকা উপার্জন হত। তাতেই চার জনের সংসার কোনওরকমে টেনেটুনে চলে যেত। কিন্তু গত এক মাস ধরে টোটোরচাকা গড়ায়নি।
বছর চারেকের ছেলে, স্ত্রী ও বৃদ্ধা মা আর শ্রীকান্তর এখন একবেলা অনাহারেই কাটাতে হচ্ছে। শ্রীকান্ত জানালেন, সামান্য কিছু সঞ্চয় ছিল। আপাতত লক্ষ্মীর ভাঁড়ার ভেঙেই তাঁদের চালাতে হচ্ছে।
মলিন হয়ে যাওয়া ইটের দেওয়াল, অ্যাসবেস্টসের ছাউনি। ১০ ফুট বাই সাত ফুটের দু’টি ঘর। বাড়ির হতশ্রী চেহারা শ্রীকান্তদের বর্তমান আর্থিক অবস্থা বুঝিয় দেবে। শ্রীকান্তের স্ত্রী পুতুল বললেন, ‘‘ছেলেটার মুখের দিক চাইতে পারি না। খিদের জ্বালায় সারাদিন কেঁদে চলে।’’ শ্রীকান্তর বৃদ্ধা মা অর্চনা বছর তিনেক ধরে স্নায়ুর রোগে ভুগছেন। নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়। চার জনের খাবার, মার ওষুধের জোগাড় করতে গিয়ে নাস্তানাবুদ অবস্থা শ্রীকান্তর। বললেন, ‘‘পেটের জ্বালায় পাড়ায় একদিন ঘুগনি বিক্রি করতে বেরিয়েছিলাম। পুলিশের তাড়া খেয়ে ফিরে আসি।’’ তবে হতাশ হতে রাজি নন তিনি। বললেন, ‘‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যে লকডাউন উঠে যাবে। তারপর সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’’