—নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তুলে টাকা ফেরতের দাবিতে শুক্রবার দুপুরে রঘুনাথগঞ্জ ১ ব্লক অফিসের মূল ফটক আটকে ধর্নায় বসলেন জনা পঞ্চাশ মহিলা। তাদের বাড়ি রঘুনাথগঞ্জ থানার সাধুয়া গ্রামে। অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ৪ বছর আগে ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা অগ্রিম তোলা নিয়েছেন তৎকালীন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য বামদেব মন্ডল। ৫৩টি পরিবারের কাছে নিয়েছেন ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু ওই ৫৩ জনের কেউই ঘর পাননি।
পরে যুগ্ম বিডিও’র হাতে একটি লিখিত অভিযোগ তুলে দেন বিক্ষোভকারীরা। এর আগেও ঘর দেব বলে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ওই পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। সে বার পথে নেমেছিলেন পাশের খুড়িপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা। সেখানে ১৪ জন গ্রামবাসী টাকা দিয়েও একই ভাবে ঘর পাননি বলে অভিযোগ তুলেছিলেন তাঁরা। দু’টি গ্রাম মিলিয়েই একটি সংসদ। সেখানে গত পঞ্চায়েতে গ্রামের তৃণমূল সদস্য ছিলেন বামদেব নিজেই। স্ত্রী চম্পা এবারে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ।
গ্রামের বাসিন্দা সমর দাসের অভিযোগ, প্রায় চার বছর আগে ৬ হাজার টাকা নিয়েছে বামদেব নিজের হাতে। তিনি তখন পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। ঘর দেব দেব করেও এখনও পর্যন্ত ঘর দেওয়া হয়নি। আর টাকা চাইতে গেলে এখন নানাভাবে হুমকি দেখাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে ব্লক অফিসে এসে ধর্নায় বসে অভিযোগ জমা দিয়েছেন তাঁরা। হরেন্দ্রনাথ দাসের অভিযোগ , “২০ হাজার টাকা ছাগল, গয়না যা ছিল বিক্রি করে দিয়েছি। ঘর পাওয়ার তালিকায় নাম আছে বলে আশ্বাস দিয়েই টাকা নেয় বামদেব । কিন্তু ঘর দেয়নি। এখন বলছে টাকাও পাব না।’’
বুদ্ধ দাসের কথা , “গ্রামের সবাই দিনমজুর। ঘর বলতে চালা। কাপড় টাঙিয়ে আড়াল দিতে হয়। তাই ঘর পাবে বলে সবাই আশায় টাকা দিয়েছিল। এখন বলছে, ‘তোমরা বিজেপি, টাকা দেব না।’’
বামদেব মন্ডল বলছেন, “আমার ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার যে অভিযোগ তুলছে গ্রামবাসীরা তা সম্পূর্ণ মিথ্যে। এদের মদত দিচ্ছে বিজেপি। ঘর পাওয়া, না পাওয়া আমার হাতে নেই।”
ব্লকের যুগ্ম বিডিও সৈয়দ মাহাবুর রহমান বলেন, “ ঘর পাইয়ে দেব বলে কিছু লোকের কাছ থেকে টাকা পয়সা তুলেছেন বলে বামদেব মন্ডলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সাধুয়া গ্রামের বাসিন্দারা। আমরা সমস্ত ব্যাপারটাই তদন্ত করে দেখছি। তারপর যা ব্যবস্থা নেওয়ার তা নেওয়া হবে।”