প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। ছবি: পিটিআই।
মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে কংগ্রেস কর্মী খুনের ঘটনার দশ ঘণ্টার মধ্যে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম কাজল শেখ ও সফিক শেখ। ধৃতেরা রতনপুর গ্রামের বাসিন্দা। শনিবার নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। এফআইআরে নাম থাকা অভিযুক্তদের গ্রেফতারির দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করেছে কংগ্রেস। সূত্রের খবর, এই খুনের ঘটনায় জেলা পুলিশের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন অধীর। তিনি বলেন, ‘‘এক জন তো মারা গিয়েছেন। তাঁর ডেড বডি (দেহ) দেখে তো আর লাভ নেই। আহত হয়েছেন ৩ জন। কিন্তু যিনি খুন হলেন, তিনিই যেন অপরাধী! তাঁদের আশপাশে পুলিশ ঘুরছে। অভিযুক্তদের পুলিশ গ্রামে আসতে বারণ করছে। আর মৃতের পরিবারকে বলছে, বাড়ি থেকে না বেরোতে!’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সংযোজন, ‘‘খড়গ্রাম পুলিশের মদতে এই ঘটনা ঘটল।’’ তিনি জানান, এ নিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নের প্রথম দিনেই ‘রাজনৈতিক হত্যা’র অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের খড়গ্রাম। অভিযোগ, শুক্রবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদ জেলার খড়গ্রাম থানার অন্তর্গত রতনপুর নলদীপ গ্রামের এক কংগ্রেস কর্মী ফুলচাঁদ শেখকে (৪২) পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে পনেরো জন দুষ্কৃতী। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, পর পর ছয় রাউন্ড গুলি করা হয় ফুলচাঁদকে। কান্দি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় গুলিবিদ্ধ কংগ্রেস কর্মীর।
অভিযোগ, বাধা দিতে গেলে বেধড়ক মারধর করেন দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনায় আহতও হয়েছেন তিন জন। যদিও ফুলচাঁদকে খুনের ঘটনায় তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। তৃণমূল তাদের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।স্থানীয় সূত্রে খবর, ফুলচাঁদ তাঁর ছেলেকে কোলে নিয়ে বাড়ির সামনে বসে ছিলেন। সেখানে তাস খেলছিলেন বেশ কয়েক জন। অভিযোগ, ‘স্থানীয় তৃণমূল নেতা’ রফিকের নেতৃত্বে জনা ১৫ দুষ্কৃতী আচমকা কংগ্রেস কর্মী ফুলচাঁদকে ঘিরে ধরে। একদম কাছ থেকে ৪২ বছরের ফুলচাঁদের মাথায় পর পর ৬ রাউন্ড গুলি করা হয় বলে অভিযোগ।
বাধা দিতে গেলে আশপাশের আরও ৩ জনকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে জানান কংগ্রেস নেতৃত্ব। এর মধ্যে স্থানীয়েরা ছুটে আসায় এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান অভিযুক্তেরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে আহত ফুলচাঁদকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় খড়গ্রাম হাসপাতালে। পরে ফুলচাঁদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে কান্দি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।