মনোজ সাহানি (বাঁ দিকে), সরস্বতী বৈদ্য (ডান দিকে)। ভাড়ার সেই ফ্ল্যাট (মাঝে)। —ফাইল চিত্র।
মুম্বইয়ের নৃশংস ‘হত্যাকাণ্ডে’র মূল অভিযুক্ত মনোজ সাহানির পুলিশের কাছে করা দাবি ‘মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিলেন মৃত মহিলা সরস্বতী বৈদ্যর বোন। পুলিশি জেরায় মনোজ দাবি করেছিলেন, তিন এইচআইভি পজ়িটিভ। এডসে আক্রান্ত হওয়ার জন্যই তিনি কখনও সরস্বতীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেননি বলেও দাবি করেছিলেন মনোজ। সরস্বতীকে তিনি কখনও বিয়ে করেননি, এমনটাই দাবি ছিল মনোজের। কিন্তু পুলিশ সূত্রের খবর, সরস্বতীর এক বোন তাঁর বয়ানে জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রের একটি মন্দিরে বিয়ে হয়েছিল সরস্বতী এবং মনোজের। মনোজের এডসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টিও ‘মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। দু’জনের বক্তব্যই খতিয়ে দেখতে চাইছে পুলিশ। মনোজ তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করতে ভুল বয়ান দিচ্ছেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তদন্তের সূত্রে পুলিশ জানতে পেরেছে, সরস্বতীর তিন বোন রয়েছে। তাঁদের বাবা-মা খুব অল্প বয়সে আলাদা হয়ে যাওয়ার পর মায়ের কাছেই থাকতেন সরস্বতীরা। পরে মা মারা যাওয়ার পর একটি অনাথ আশ্রমে রাখা হয় তাঁদের। স্থানীয় একটি স্কুলেও ভর্তি করানো হয় তাঁকে। স্কুলের পাঠ শেষ হওয়ার পর অওরঙ্গবাদে এক দিদির কাছে কিছু দিন থাকার পর মুম্বইয়ে চলে আসেন তিনি। সেখানেই সরস্বতীর সঙ্গে আলাপ হয় মনোজের। সরস্বতীকে কাজ জোগাড় করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন মনোজ। এমনকি নিজের বাড়িতে থাকতেও দেন। সরস্বতীর বোনের বয়ান অনুযায়ী, সেই সময়ই একে অপরের কাছাকাছি আসেন তাঁরা এবং বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। তবে আইনত তাঁদের বিয়ে হয়েছিল কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি সরস্বতীর বোন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে সরস্বতীর দিদি এবং বোনেদের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। মনোজের বক্তব্যও নতুন করে যাচাই করা হবে। পুলিশ জানায়, গত ৪ জুন খুন করা হয় সরস্বতীকে। তার পর তাঁর দেহ টুকরো করা শুরু করেন মনোজ। কিছু দেহাংশ গায়েব করে দেওয়া হয় বলে জানায় পুলিশ। তাদের ধারণা, সেই দেহাংশ অন্য কোথাও ফেলে এসেছেন মনোজ। তবে একত্রবাসের সঙ্গীকে টুকরো করে তার দেহাংশ কুকুরকে খাইয়েছেন মনোজ— এই তত্ত্ব মানতে রাজি হয়নি পুলিশ। মনোজের অবশ্য দাবি সরস্বতী নিজেই ৪ জুন বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। সব কিছু খতিয়ে দেখেই এই বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করতে চাইছেন তদন্তকারীরা।