বহরমপুরে দু’টি বইমেলা। —ফাইল চিত্র।
চলতি বছর একই সময়ে বহরমপুরে জোড়া বইমেলা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ব্যারাক স্কোয়ারে হবে জেলা বইমেলা। এ ছাড়া, ‘সূর্যসেনা’ নামে আরেকটি সংস্থার উদ্যোগেও হতে চলেছে শিশু বইমেলা ও শিশু সাংস্কৃতিক উৎসব হবে।
১১-১৭ ডিসেম্বর রাজ্য সরকারের উদ্যোগে মুর্শিদাবাদ জেলা বইমেলা হবে বহরমপুরে ব্যারাক স্কোয়ারে এবং ১৪-১৯ ডিসেম্বর বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ স্কুলের মাঠে হবে মুর্শিদাবাদ জেলা শিশু বইমেলা এবং শিশু সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনেকেই একই দিনে বহরমপুরে এসে এই দুই বইমেলায় বই কেনাকাটা ও ঘোরার সুযোগ পাবেন। তবে চার দিন অর্থাৎ ১৪-১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত দু’টি বইমেলা একই দিনে চলবে। দু’টি ভিন্ন স্বাদের বইমেলার স্বাদ পেতে এই চার দিন অনেকে বেছে নিতে পারেন। আবার আলাদা দিনে দুটি বইমেলা ঘুরে বই কিনতেও পারেন।
মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলা শাসক(উন্নয়ন) চিরন্তন প্রামাণিক বলেন, ‘‘রাজ্য থেকে জেলা বইমেলার দিন ঠিক করা হয়েছে। এই সরকারি বইমেলার সঙ্গে অন্য বেসরকারি বইমেলার কোনও সম্পর্ক নেই।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, এ বার জেলা বইমেলার থিম ‘ভাষা দিয়ে সম্প্রতি গড়ব’। ১১-১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই বইমেলা চলবে। ১১ ডিসেম্বর রাজ্যের জনশিক্ষা প্রসার ও গ্রন্থাগার দফতরের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর এই বইমেলার উদ্বোধন করার কথা। সেখানে ১৩০টি স্টল থাকছে। তার মধ্যে ৮৫টি বইয়ের স্টল। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দফতরকে যেমন স্টল দেওয়া হবে। তেমনই জনশিক্ষা প্রসার দফতর এবং গ্রন্থাগার দফতরের দু’টি সংগ্রহশালা প্রদর্শনীর জন্য রাখা হচ্ছে। প্রতিদিন দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বইমেলা চলবে। প্রতি বছরের মতো এ বছরও সংস্কৃতিক বিষয়ের উপরে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। বরাবরই ব্যারাক স্কোয়ারে একটি বড় এলাকা ঘিরে চারিদিকে বইয়ের স্টল করা হয়। যার জেরে বইমেলা ঘুরতে গিয়ে অনেকে নাকাল হন। বিশেষ করে বয়স্ক এবং শিশুরা সমস্যায় পড়েন। সে কথা মাথায় রেখে জেলা বইমেলার আয়তন ছোট করা হচ্ছে। চারদিকে যেমন বইয়ের স্টল থাকবে, ভিতরে আরও কয়েকটি লাইনে বইয়ের স্টলও করা হবে। যার ফলে অল্প জায়গায় বেশি বইয়ের স্টল ঘোরার সুযোগ মিলবে।
জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক মনোঞ্জয় রায় বলেন, ‘‘কবি সাহিত্যিকদের জন্য যেমন প্যাভিলিয়ন থাকবে, তেমনই জেলার লেখকদের জন্য স্টল থাকবে। হবে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতাও। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে মেলার মূল মঞ্চে। সকলের অবাধ প্রবেশ করতে পারবেন।’’ মনোঞ্জয় আরও বলেন, ‘‘গত বছর জেলা বইমেলার এক কোটি ৩৬ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। এ বার আরও বেশি বিক্রি হবে বলে আমরা আশাবাদী।’’
অন্য দিকে, আগামী ১৪ ডিসেম্বর বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ স্কুলের মাঠে সূর্যসেনা পরিবারের উদ্যোগে আয়োজিত মুর্শিদাবাদ জেলা শিশু বইমেলা এবং শিশু সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধন হবে। চলবে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বেলা ২টো থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে। সেখানে ২০টি শিশুদের উপযোগী বইয়ের স্টল বসবে। সেই সঙ্গে মেলার কদিন ১৯টি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। তাতে হাজার দেড়েক প্রতিযোগি অংশ নেবে।
উদ্যোক্তাদের দাবি, এই শিশু বইমেলা ভারতের প্রথম। ৩২ বছর ধরে টানা নিরবচ্ছিন্ন ভাবে এই মেলা হচ্ছে বলে জানান সম্পাদক নির্মল সরকার।