(বাঁ দিকে) দুলাল সরকারের স্ত্রী চৈতালির সঙ্গে দেখা করেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং দুলাল সরকার (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
মালদহের তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল সরকার ওরফে বাবলাকে খুনের মূলচক্রী কে? গত কয়েক দিন ধরে এই প্রশ্ন উঠছে বার বার। তাঁর স্ত্রী চৈতালি সরকার আগেও এই একই দাবি করেছেন। সোমবার আবার সেই কথা শোনা গেল তাঁর মুখে। একই সঙ্গে চৈতালির অভিযোগ, তাঁর স্বামী রাজনৈতিক ভাবে অনেক এগিয়ে গিয়েছিলেন। হয়তো অনেকের তা সহ্য হয়নি। ক্ষমতার লোভেই দুলালকে খুন করা হয়েছে। সোমবার তাঁর বাড়ি গিয়ে দেখা করে এলেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
গত ২ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়ার কাছে নিজের প্লাইউড কারখানার সামনে খুন হন দুলাল। বাইকে চেপে এসে তিন জন দুষ্কৃতী দুলালকে লক্ষ্য করে পর পর গুলি করে। সেই ঘটনায় এখনও বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার মধ্যে রয়েছে ভাড়াটে খুনিও। তবে ‘সুপারি কিলার’দের কারা টাকা দিল, কারা খুনের পরিকল্পনা করল, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে। এই আবহেই মালদহ জেলা পুলিশ জানায়, দুলালের খুনের সঙ্গে যুক্ত কৃষ্ণ রজক ওরফে রোহন এবং বাবলু যাদব। তাঁদের ধরিয়ে দিতে পারলে বা কোনও খোঁজ পুলিশকে দিতে পারলে দু’লক্ষ টাকা পুরস্কার মিলবে।
দুলাল-খুনে অধরা ‘মূলচক্রী’দের নিয়ে আবার প্রশ্ন তুললেন চৈতালি। খুনের নেপথ্যে কারণ কী, তা এখনও অস্পষ্ট। তবে চৈতালির দাবি, ‘‘দুলাল চেয়ারম্যান হবেন, এমন কথা চলছিল। আমরা জানতাম। তা নিয়ে কিছু মানুষের হিংসা ছিল। বাবলা রাজনৈতিক ভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল। অনেকে পিছিয়ে পড়ছিল। যাঁদের ক্ষমতার লোভ, তাঁরাই এমন কাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারেন।’’ এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তিনি দেখা করবেন বলে জানান চৈতালি। তাঁকেই নিজের সংশয় এবং সন্দেহের কথা জানাবেন তিনি।
সোমবার চৈতালি এবং তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন চন্দ্রিমা। তাঁর কথায়, ‘‘খুনিরা যদি ভাড়াটে হয়, তবে তো তার মাথা থাকবেই। পুলিশ সেই মাথা খুঁজবে। মুখ্যমন্ত্রী ঘটনার তদন্তের উপর নজর রাখছেন। কেন দুলালের নিরাপত্তা সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি। সেই বিষয়টি কার নির্দেশে হয়েছে, তা-ও আগামী দিনে জানা যাবে।’’
দুলালের খুনের ঘটনায় আগেই বিহারের যোগ মিলেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল কাউন্সিলরকে খুনের জন্য বিহার থেকে ‘শুটার’ ভাড়া করা হয়েছিল। পুলিশ এখনও পর্যন্ত যাঁদের গ্রেফতার করেছে, তাঁদের মধ্যে দু’জন বিহারের বাসিন্দা। দুলালের মৃত্যুর খবরে শোকপ্রকাশ করেন মমতা। এই খুনের ঘটনায় নিজের অধীন পুলিশবাহিনীর একাংশকেই কাঠগড়ায় তোলেন মমতা। তাঁর ভর্ৎসনার পর পুলিশ আরও সক্রিয় হয়েছে। পর পর সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার করা হয়েছে।