মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
ঘুষের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন তোলার অভিযোগ থাকায় সিবিআই আগেই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের বিষয় জড়িত থাকায় আবার আগামী ১১ মার্চ, সোমবার তাঁকে তলব করেছে ইডি। সাংসদ ও বিধায়কদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠলে কোনও রক্ষাকবচ মিলবে না বলে ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
ফলে কৃষ্ণনগরের বহিষ্কৃত সাংসদ তথা দলের জেলা সভানেত্রীর বিরুদ্ধে বিরোধীদের প্রচারের কী ভাবে মোকাবিলা করা হবে তা নিয়ে ঘোরতর চিন্তায় রয়েছে জেলা তৃণমূল। অনেকেরই ধারণা, সব কিছু ঠিকঠাক চললে মহুয়াই ফের কৃষ্ণনগরে তৃণমূলের প্রার্থী হতে চলেছেন। সে ক্ষেত্রে তাঁর সততা নিয়ে প্রশ্নের মোকাবিলা করতে না পারলে ভোটে জেতা কঠিন হয়ে যেতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। দলীয় সূত্রের দাবি, ইডি-সিবিআই তাঁকে জ্বালাতন করতে থাকবে মহুয়া নিজেই কর্মীদের একাংশের কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ভোটের বাজারে সেই আশঙ্কার ছায়াও লম্বা হচ্ছে।
সম্প্রতি কৃষ্ণনগরে জনসভা করতে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মহুয়া প্রসঙ্গে কোনও শব্দ খরচ না করলেও রাজ্য বিজেপির দুই শীর্ষ নেতা সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারী তাঁকে নিশানা করেছেন। ভোট যত এগোবে এই আক্রমণ তত তীব্রতর হবে বলে তৃণমূল নেতাদের আশঙ্কা। উত্তর নদিয়ার এক তৃণমূল বিধায়কের কথায়, “অভিযোগ গুরুতর। মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে এর উত্তর দিতে হবে। তার পর, ভোটের আগে যদি ওঁর বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপ করা হয়, তা হলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া আরও কঠিন হবে।” বিরোধীরা অবশ্য এখনও মুখ বুজে নেই। সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাস বলেন, “মানুষের ভোটে নির্বাচিত এক জন সাংসদ আদানির মতো শিল্পপতিদের বিরুদ্ধে কথা বলতেই পারেন। কিন্তু এক জন শিল্পপতির কাছ থেকে টাকা নিয়ে আর এক জন শিল্পপতির বিরুদ্ধে কথা বলা মানে নির্দিষ্ট এক পক্ষের হয়ে কাজ করা।” বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস আবার দাবি করেন, “সাংসদ অর্থের বিনিময়ে দেশের নিরাপত্তা বিক্রি করে দিচ্ছেন, এটা তো সরাসরি দেশদ্রোহিতা। দেশের নিরাপত্তার স্বার্থেই মহুয়া মৈত্রকে হারাতে হবে।” তবে তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান পাল্টা বলেন, “অভিযোগ তো প্রমাণ করতে হবে। সকলেই বুঝছে, আদানির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলায় ওঁকে ফাঁসানো হয়েছে।”