সহকারী প্রধানশিক্ষককে বিধায়ক অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘হয় আমাদের পিন্ডি চটকান, নয় ডিউটি করুন। দুটো একসঙ্গে নয়।’’ —নিজস্ব চিত্র।
বকেয়া মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ-এর দাবিতে মুর্শিদাবাদের কান্দির ছাতিনাকান্দি গুরুপদ উচ্চ বিদ্যালয়ে গরহাজির ছিলেন শিক্ষকেরা। মঙ্গলবার ওই স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে সহকারী প্রধানশিক্ষককে ধমক দিলেন স্থানীয় বিধায়ক অপূর্ব সরকার। তৃণমূল বিধায়কের জানান, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হবে। স্কুলে ঢুকে শিক্ষককে বিধায়কের এই ধমক নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
মঙ্গলবার কান্দি পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার ওই হাই স্কুলে আচমকা পরিদর্শনে যান কান্দির বিধায়ক। তার পরই শুরু হয় শিক্ষকদের ধমক-চমক। সহকারী প্রধানশিক্ষক গোপীগোপাল সাহাকে বলেন, ‘‘সরকারের পিন্ডি চটকালে নিয়মমাফিক ডিউটি করতে হবে। তখন কোনও বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে না।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, কান্দির ওই স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ২১। তবে মঙ্গলবার স্কুলে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ৪ জন। ডিএ-এর দাবিতে ওই স্কুলের শিক্ষকদের আন্দোলনে যোগ দেওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিধায়ক। তার পরই এই চোটপাট। অন্য দিকে, ওই স্কুলের সহকারী প্রধানশিক্ষক জানাচ্ছেন, তিনি ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবেন। তাঁর কথায়, ‘‘মঙ্গলবার স্কুল ছুটি থাকার কারণে অনেকে (শিক্ষক) এসেছিলেন। তাঁরা সই করে চলে গিয়েছেন। আমি তাদের বারণ করেছিলাম। তা-ও তাঁরা চলে গিয়েছেন। এখন বিধায়ক আমার কাছে জানতে চেয়েছেন কেন শিক্ষকরা নেই। আমি ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’’
এর আগে একটি স্কুলে ঢুকে প্রধানশিক্ষিকাকে ধমক দিতে দেখা গিয়েছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহকে। সেখানেও কারণ একই— বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে ধর্মঘটে অংশ নেওয়া।
কান্দির বিধায়কের এই হুঁশিয়ারি নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। মুর্শিদাবাদের বিজেপি বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষের কথায়, ‘‘তৃণমূল করলে যত বেনিয়ম করার ছাড়পত্র মেলে— এমনটা আমাদের দাবি ছিল। তৃণমূল বিধায়ক আজ তাকেই স্বীকৃতি দিলেন।’’