সাংসদ আবু তাহের খান। ছবি: টুইটার।
সাংসদ আবু তাহের খানের অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ ঘনিয়েছে করিমপুরের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। নদিয়ার এই বিধানসভা কেন্দ্রটি মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। তবে সাংসদ হিসেবে যতটা না, অন্য কারণে আবু তাহেরের প্রয়োজন এই এলাকায় বেশি অনুভূত হয়। কেননা করিমপুরে প্রাক্তন ও বর্তমান বিধায়কের মধ্যে বিবাদ কার্যত সর্বজনবিদিত। দলের এই কোন্দল মেটাতে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবু তাহেরকেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
গত কয়েক দিন ধরে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ঘোরতর সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন আবু তাহের। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এই অবস্থায় দলীয় নেতৃত্বের কোন্দল সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা আরও বেশি বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বুধবার তৃণমূলের করিমপুর ১ ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি তরুণ সাহা বলছেন, "আমরা প্রতিনিয়ত ওঁর খোঁজখবর নিচ্ছি। এখানে দলে মতপার্থক্য হলেই উনি চটজলদি এসে বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে দিতেন।"
করিমপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল মেটাতে আবু তাহের খানকেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন দলনেত্রী। গত সেপ্টেম্বরে কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের সভায় কৃষ্ণনগরের সাংসদ তথা করিমপুরের প্রাক্তন বিধায়ক মহুয়া মৈত্রকে কার্যত সতর্ক করে মমতা বলেন, “করিমপুর তোমার জায়গা নয়।” সাংসদ আবু তাহেরই সেখানকার সমস্যা মেটাবেন বলেও তিনি জানিয়ে দেন। এর পর নভেম্বরে রানাঘাটের প্রশাসনিক বৈঠকে করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায় করিমপুর ১ বিডিও-র বদলির দাবি জানালে তখনও আবু তাহেরকেই সমস্যা মেটানোর দায়িত্ব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের বক্তব্য, এলাকার উন্নয়নমূলক কাজে সাংসদ যেমন আসতেন, দলের কর্মসূচিতেও যোগ দিতেন। করিমপুরে তৃণমূলের সংগঠনে আবু তাহেরের তেমন প্রভাব আগে না থাকলেও মমতা তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া পরে স্বভাবতই তাঁর প্রভাব বাড়ে।
মাস তিনেক আগে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদ থেকে বিধায়ককে সরিয়ে সাংসদকে বসানো হয়। বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায় এ দিন বলেন, "খুব সহজেই দলের মধ্যে বিবাদ মেটাতে পারতেন আবু তাহের খান। সেই কারণেই নেত্রী ওঁকে করিমপুরের রাজনৈতিক বিতর্ক মেটাতে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কামনা করি, উনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে আমাদের মধ্যে ফিরে আসুন।"