ধর্মঘটের ডাকে বা শ্রমিক সংগঠন ও কংগ্রেসের এক সঙ্গে মিছিল। বহরমপুরে। নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রীয় শ্রমিক ও কৃষক সংগঠনগুলির ডাকা বৃহস্পতিবারের দেশ জুড়ে ধর্মঘটকে সফল করতে জেলাতেও কোমর বেঁধেছেন বাম কংগ্রেস দুই দলের কর্মীরা। একই সঙ্গে এই ধর্মঘটকে সামনে রেখে আসন্ন বিধানসভা ভোটে দুই দলের নেতৃত্বই দেখে নিতে চাইছেন জোট নিয়ে নিচু তলার কর্মীদের মানসিকতা। সেই কারণেই জেলায় বাম ও কংগ্রেসের বিভিন্ন শাখা সংগঠনগুলি যৌথ ভাবে একাধিক সভা করেছে। দুই দলের কর্মীরা নিজেদের পতাকা নিয়ে মিছিলেও হেঁটেছেন জেলার প্রায় ২৬টি ব্লকেই। পাঁচ মহকুমাতেই পাড়ায় পাড়ায় প্রচারের পাশাপাশি দেওয়াল লিখন, সান্ধ্যকালীন বৈঠক, বাড়ি বাড়ি গিয়ে কেন্দ্র সরকারের নীতির বিরোধীতার জন্য মানুষকে ধর্মঘটের সামিল হওয়ার আহবান জানিয়েছেন বলে দাবি দুই দলের নেতা কর্মীদের। সেখানে মানুষের কাছ থেকে সাড়াও পেয়েছেন বলে দাবি দু’পক্ষেরই। যদিও স্থানীয় সূত্রে দাবি, সব জায়গাতে তেমন সাড়া পাননি তাঁরা।
দেশ জুড়ে ধর্মঘটের সমর্থনে এই কর্মসূচি হলেও বাম দলের নেতারা একে ভোটের আগে জোটের প্রস্তুতি মানতে রাজি নন। কিন্তু রাজনীতির কারবারিরা দুই দলের এই যৌথ কর্মসূচিকে ভোটের আগে মহড়া বলেই মনে করছেন। ধর্মঘটের দিন বাম দলের নেতা কর্মীরা রাস্তায় নেমেই ধর্মঘট সফল করবেন বলে জানিয়েছেন। এমনকি বন্ধের সমর্থনে ওই দিন যৌথভাবে মহামিছিলেরও ডাক দিয়েছেন কর্মীরা। বামেদের সুরে সুর মিলিয়েছে জেলা কংগ্রেসও। তবে এই বন্ধের দাবিকে সমর্থন জানালেও ধর্মঘটের রাস্তায় হাঁটবে না বলেই জানিয়েছেন শাসক দল তৃণমূলের জেলা নেতারা। উল্টো দিকে দুই শক্তি মিলিয়ে জেলায় বনধের ভালই প্রভাব পড়বে বলে আশা করছেন দুপক্ষই। কিন্তু সেই ধর্মঘট কখনওই জোর জবরদস্তির হবে না বলে জানিয়েছেন বামফ্রন্টের জেলা আহবায়ক নৃপেন চৌধুরী। তিনি বলেন, “ধর্মঘট সফল করতে আমাদের আলাদা করে কোনও জোর খাটাতে হবে না। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়াতেই ধর্মঘট সফল হবে।” ধর্মঘটের দিন পিকেটিং করার তাই কোনও প্রয়োজন হবে না, শান্তিপূর্ণ ভাবে জেলা জুড়ে সভা হবে, মিছিল হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে একে জোটের কর্মসূচি বলতে রাজি নন বামেরা।
কিন্তু কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, “কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে ডাকা এই ধর্মঘটকে সফল করতে রাস্তায় নেমেই প্রতিবাদ করা হবে। আমাদের দলের নিচুতলার কর্মীরাও বামেদের সঙ্গে যৌথভাবে মাঠে নামতে মানসিক ভাবেও প্রস্তুত। প্রতিরোধ এলে প্রতিবাদ করা হবে।” আবু তাহের খান বলেন, “তৃণমূল ধর্মঘটের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হবে না। তবে কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে ওই দিন তৃণমূলের সর্বস্তরের কর্মীরা মিটিং মিছিল করবে।”