হাসপাতালের সামনে করুণ মুখে দাঁড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে চোরাই ফোন, প্রতীকী চিত্র।
হয়তো হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। হঠাৎ কোনও ব্যক্তি এসে দাঁড়ালো আপনার সামনে। করুণ মুখ, সঙ্গে কাকুতিমিনতি। ব্যাপার কী? সেই ব্যক্তি তখন বলবেন, তাঁর কোনও নিকটাত্মীয় হাসপাতালে ভর্তি, চিকিৎসার খরচ অনেক। এ বার আপনার মন করুণায় ভরে গেলে সেই ব্যক্তি বার করবে একটি দামি মোবাইল। সেই মোবাইলের বদলে সে চায় আপনি তাকে কিছু টাকা দেবেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, এমন আবেদনে অনেকেই সাড়া দেন। দুঃস্থ মানুষের পাশে সকলেই দাঁড়াতে চান। সেই সঙ্গে প্রায় অর্ধেক দামে মিলছে একটি দামি মোবাইলও।
যিনি সেই মোবাইল কিনলেন, তিনি বুঝতেও পারছেন না, কতটা ঠকছেন। কেননা, সেই মোবাইল চুরি করে এনে যা দাম মেলে তাতেই বিক্রি করা হয়েছে। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা হল, মোবাইলের সঙ্কেত ধরে তা শেষ পর্যন্ত পুলিশ উদ্ধারও করে ফেলবে।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এ ছাড়াও যাদের আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা কম, সেই সব মানুষের কাছেও কম দামে বিক্রি করা হয় ওই ফোন। পুলিশকর্তাদের দাবি, অনেকেই ভেবে থাকেন সিম বদলালেই কেল্লাফতে। তবে যেভাবে ফোন উদ্ধার করা হচ্ছে তার ফলে বিশেষ করে চুরির ঘটনা অনেকটাই কমে গিয়েছে। আগামী দিনে বিষয়টি আরও কমবে বলে আশা তাদের। তবে এই প্রযুক্তির সুবিধা নিতে সাধারণ মানুষকে ফোনের আইএমইআই সংগ্রহে রাখার জন্য অনুরোধ করেছেন পুলিশ কর্তারা।
মাস কয়েক আগে ডোমকল পুরসভার মেহেদি পাড়া এলাকার বাসিন্দা বিলকিস বানুর ফোন হারিয়ে গিয়েছিল বাড়ি থেকে ডোমকলে আসার পথে। বিলকিসের কথায়, "ফোন যে ফেরত পাব সে আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলাম। পুলিশকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।" একই ভাবে ডোমকল থানার হরিশংকরপুর গ্রামের মিঠু দাস বৈরাগ্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন পুলিশকে। বাড়ি থেকে ডোমকলে আসার পথে ফোনটা হারিয়ে গিয়েছিল।
ডোমকল মহকুমার এসডিপিও শেখ শামসুদ্দিন বলেন, "আমরা প্রায় গত এক বছরে গোটা মহকুমা এলাকায় ৭৩২টি ফোন ফেরত দিতে পেরেছি মালিকদের। এটা আমাদের কাছেও আনন্দের।"