মোবাইল টাওয়ার। —ফাইল চিত্র।
বাড়ি-ঘর, গুদাম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তো বটেই, চোরেদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না মোবাইলের টাওয়ারও। মুর্শিদাবাদ জুড়ে মোবাইল টাওয়ার থেকে চুরি করে নিচ্ছে মোবাইল টাওয়ারের ব্যাটারি। যার প্রভাব পড়ছে মোবাইল ও ইন্টারনেটের নেটওয়ার্কেও। গত এক বছরে বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ, রেজিনগর, হরিহরপাড়া, নবগ্রাম, শক্তিপুর, বড়ঞা থানা এলাকায় ১৬টি মোবাইল টাওয়ার থেকে ৩৫৫টি ব্যাটারি চুরি গিয়েছে। এ বিষয়ে মোবাইল টাওয়ার রক্ষণাবেক্ষণ কোম্পানির পক্ষ থেকে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
১ নভেম্বরও শক্তিপুরের বাজারসৌতে মোবাইল টাওয়ারের ব্যাটারি চুরি গিয়েছে। যা শুনে মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, ‘‘আগে এক বার ওরা চুরির কথা বলেছিল। আমরা সে সময় এ বিষয়ে পদক্ষেপ করেছিলাম। ফের একটি কোম্পানির পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। আমরা মোবাইল টাওয়ারের ব্যাটারি চুরি রুখতে পদক্ষেপ করছি। সেই সঙ্গে ওই বেসরকারি সংস্থাকেও সুরক্ষা ব্যবস্থা ঠিক করার কথা বলা হয়েছে।’’
মোবাইল টাওয়ার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা একটি বেসরকারি সংস্থার মুর্শিদাবাদের সিকিউরিটি ইনচার্জ আব্দুল আলিম বিশ্বাস বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ জুড়ে মোবাইল টাওয়ারে ব্যাটারি চুরি ক্রমে বাড়ছে। চলতি বছরের শুরু থেকেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় এই চুরির ঘটনা ঘটছে। গত ছ’মাসে জেলায় প্রায় ত্রিশ লক্ষ টাকার ব্যাটারি চুরি গিয়েছে। পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবিও জানিয়েছি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘গত প্রায় দু’বছর ধরে মোবাইল টাওয়ারে ব্যাটারি চুরি বন্ধ ছিল। কিন্তু ফের নতুন করে মোবাইল টাওয়ারের ব্যাটারি চুরি হতে শুরু করেছে। থানায় এফআইআর করলেও তাতে কোনও কাজ হয়নি। চুরি আটকাতে না পারায় জেলার মানুষ সঠিক মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা পাচ্ছেন না।’’
মোবাইল টাওয়ার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তাঁদের আওতায় জেলায় ১৩০০ মোবাইল টাওয়ার রয়েছে। ওই মোবাইল টাওয়ারগুলি থেকে তিনটি সংস্থার মোবাইল নেটওয়ার্ক ছাড়াও ইন্টারনেট, ব্রডব্যান্ড পরিষেবা দিয়ে থাকে। মোবাইল টাওয়ারে অবশ্য কোম্পানির তরফ থেকে নিরাপত্তারক্ষী থাকে না। টাওয়ারগুলিতে ১৬ রকমের অ্যালার্ম থাকে। সেই অ্যালার্ম থেকে চুরিসহ নানা বিষয় জানা যায়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সেই ‘অ্যালার্ম সিস্টেম’কে অকেজো করে দিয়ে চুরির ঘটনা ঘটছে।
এই সব চুরির পিছনে কারা? জেলা পুলিশ এক আধিকারিক জানান, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নেশার টাকা জোগাড় করতে চুরি করা হচ্ছে। এক সময় জেলা জুড়ে মাদকের রমরমা ছিল। কিন্তু ২০১৪-১৫ সাল থেকে জেলায় মাদকের রমরমা কমেছিল। এখন বাড়ছে। তবে কি মাদকের কারবার ফের সক্রিয় হয়েছে?