—নিজস্ব চিত্র
তাঁরা শাসকদল-পন্থী প্রাথমিক শিক্ষক। নিজেদের আয়োজিত স্বেচ্ছা রক্তদান শিবিরে নিয়ম ভেঙে রক্তদাতাদের তাঁরা ছাতা উপহার দিলেন এবং সেই ছাতার মাধ্যমে করোনা রুখতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নিদানও বাতলালেন!
যে কোনও স্বেচ্ছা রক্তদান শিবিরে রক্তদাতাদের কোনও রকম উপহার দেওয়া নিষিদ্ধ। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রানাঘাট মহকুমা শাখার সদস্যেরা তাঁদের রক্তদান শিবিরে কী করে এমন বেনিয়মের পথে হাঁটলেন, সে প্রশ্ন উঠেছে। যার জবাবে তাঁরা অবশ্য দাবি করেছেন, উপহার নয়, স্মারক হিসাবে তাঁরা ছাতা দিয়েছেন।
তার থেকেও যে প্রশ্নটি অনেকের মনে উঠেছে তা হল, সামাজিক দূরত্বে ছাতার ভূমিকা নিয়ে! এ যাবৎ করোনা নিয়ে অসংখ্য জায়গায় অজস্র আলোচনা ও পরামর্শ আদানপ্রদান হয়েছে। কিন্তু ছাতার ভূমিকা নিয়ে এমন অভিনব পরামর্শ কোথাও মেলেনি।
এরও একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন আয়োজকেরা। সংগঠনের জেলা সভাপতি জয়ন্ত সাহা-র কথায়, “ছাতার মাধ্যমে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা যায়। পাশাপাশি দু’জন ছাতা মাথায় নিয়ে দাঁড়়ালে দেখবেন ছাতায়-ছাতায় ধাক্কা লেগে পরস্পরের মধ্যে একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে যাচ্ছে। কোনও লাইনে ছাতা খুলে পর-পর দাঁড়়ালে সেটা আরও স্পষ্ট বুঝতে পারবেন।’’
তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘করোনার আবহে জেলা পরিষদ এবং জেলা প্রশাসনের সবাইকে ছাতা ব্যবহারের আবেদন জানানো হয়েছে। আমরাও সেই আবেদন জানিয়েছি। এ ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করতেই ছাতা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে যে সব জিনিস খেলে মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়়ে সেগুলিও দেওয়া হয়েছে। যেমন নিমের চারা, আমলকী, সজনের ডাঁটা, আদা, রসুন, মধু, নিমপাতা, লেবু, হলুদ, দারুচিনি।’’
এই রক্তদান শিবিরে রাজ্য কর্মচারী ফেডারেশনের পরিদর্শক শাখার জেলা আহ্বায়ক মৃণাল বিশ্বাস, জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডু, সহকারী সভাধিপতি দীপক বসু, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ বর্নালী দে-র মতো অনেকে উপস্থিত ছিলেন। মৃনাল বিশ্বাস বলেন, “আমি মনে করি, এ দিনের উপাহার সকলের চোখ খুলে দেবে। আমরা অনেক কিছু ভুলে যাই। সেটা স্মরণ করিয়ে দেবে।’’ আর জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুন্ডু-র বক্তব্য, “এই সময়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা খুবই জরুরি। তাই মুখে মাস্ক পরার জন্য ও ছাতা ব্যবহার করার জন্য সকলের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।’’