IIHT New Campus

আইআইএইচটি পেল ক্যাম্পাস, ব্রাত্য বিরোধী 

প্রায় ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫.৩৮ একর জমিতে তৈরি হয়েছে ক্যাম্পাস। এত দিন ৩৩ জন পড়ুয়া ভর্তির পরিকাঠামো থাকলেও চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে ৬০ জন ভর্তি হতে পারবেন।

Advertisement

সুদেব দাস

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৩০
Share:

উদ্বোধনের পরে গিরিরাজ সিংহ। শনিবার ফুলিয়ায়। ছবি: প্রণব দেবনাথ।

ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব হ্যান্ডলুম টেকনোলজি-র (আইআইএইচটি) নতুন ক্যাম্পাসের উদ্বোধন হল। কেন্দ্রীয় বস্ত্র ও সমবায় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ এলেন। কিন্তু ‘আমরা-ওরা’ সংস্কৃতির অন্ত ঘটল না!

Advertisement

রাজ্যের বয়নশিল্পের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র শান্তিপুরের ফুলিয়ায় ২০১৫ সালে বস্ত্রবয়ন প্রযুক্তি শিক্ষার এই প্রতিষ্ঠান চালু হয়েছিল। সারা দেশে এই রকম মোট ছ’টি কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান আছে। তবে এত দিন ফুলিয়ায় প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ভবন বা ক্যাম্পাস ছিল না। প্রায় ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫.৩৮ একর জমিতে তৈরি হয়েছে ক্যাম্পাস। এত দিন ৩৩ জন পড়ুয়া ভর্তির পরিকাঠামো থাকলেও চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে ৬০ জন ভর্তি হতে পারবেন।

শনিবার সেই ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করেন গিরিরাজ। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার, বিধায়ক অসীম বিশ্বাস, বঙ্কিম ঘোষ, শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নৃপেন মণ্ডল প্রমুখ বিজেপি নেতারা। কিন্তু শান্তিপুরের তৃণমূল বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী বা নদিয়া জেলা পরিষদের সদস্য তথা ফুলিয়ার বাসিন্দা রিক্তা কুণ্ডুকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। যে রকম উল্টো দিকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে আমন্ত্রণ পান না বিরোধী জনপ্রতিনিধিরা।

Advertisement

তবে প্রত্যাশিত ভাবেই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি, বিজেপি নেতা চঞ্চল চক্রবর্তীর দাবি, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের অভিভাবক। তাঁর কাছ থেকেই আমরা শিখেছি। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রশাসনিক বৈঠকে, সভায় আমাদের বিধায়ক,সাংসদ, জনপ্রতিনিধিদের ডাকা হয় না।" শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোরের কটাক্ষ, "আমন্ত্রণ না করার জন্য আমি ওদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।"

এ দিন উদ্বোধনী বক্তৃতায় রাজ্য সরকারকে নিশানা করে গিরিরাজ দাবি করেন, "আমি তিন দিন ধরে বাংলায় রয়েছি। কিন্তু বস্ত্রমন্ত্রক কী ভাবে এখানকার পাট এবং তাঁত শিল্পকে প্রযুক্তিগত ভাবে উন্নত জায়গায় নিয়ে যেতে পারে, তা নিয়ে আলোচনার জন্য রাজ্যের তরফে কেউ আসেননি।" বস্ত্রমন্ত্রীর দাবি, ভারত সরকার এমন প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা করেছে যাতে ২০ দিনের পরিবর্তে কৃত্রিম ভাবে পুকুরে মাত্র সাত দিন পাট ভিজিয়েই আঁশ ছাড়ানো সম্ভব হবে। আগামী দিনে বিশ্ববাজারে অনেক বেশি দামে পাট ও কৃষিজ দ্রব্যের বিক্রি দরজা খুলে যাবে বলেও মন্ত্রীর দাবি। গিরিরাজ দাবি করেন, “আমাদের প্রক্রিয়াজাত পাট বর্তমানে জার্মানি পর্যন্ত যাচ্ছে। আমাদের যা লক্ষ্যমাত্রা তাতে ২০৩০ সালের মধ্যে বস্ত্রশিল্পে দেশের ছয় কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে।”

তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, "এক দিন এসে মুখে বলে দিলেই তাঁত বা অন্যান্য শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষের জীবন পাল্টে যায় না। এখনও কৃষকদের জন্য ন্যূনতম বিক্রয়মূল্য (মিনিমাম সেল প্রাইস) চালু করতে পারেনি বিজেপি সরকার।”

তাঁর দাবি, “বিজেপি নেতারা মুখে যে অচ্ছে দিনের কথা বলেন সেটা আসলে সোনার পাথর বাটি। বাংলার মানুষের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়েও ওঁরা মিথ্যার ডালা সাজিয়ে রাজ্যে আসেন।"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement