বহরমপুর গার্লস কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুতপা চৌধুরী এবং খুনের অভিযোগে ধৃত সুশান্ত চৌধুরী। ফাইল ছবি।
২০২২ সালের ২ মে, সোমবার। মেসে ফেরার পথে প্রেমিকের হাতে খুন হন বহরমপুর গার্লস কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুতপা চৌধুরী। ছাত্রী খুনের ঠিক এক বছরের মাথায় মঙ্গলবার ওই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ করল আদালত। প্রেমিকাকে খুনের অভিযোগে ধৃত সুশান্ত চৌধুরীকে হাজির করানো হয় আদালতে। তবে আগের মতো কোনও মন্তব্য করলেন না তিনি। এমনকি পুলিশি ঘেরাটোপে আদালত থেকে বেরনোর সময়ও বললেন বিচারাধীন মামলায় তিনি কোনও কিছু বলতে রাজি নন।
মঙ্গলবার বহরমপুরে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে অতিরিক্ত এবং জেলা দায়রা বিচারক সন্তোষকুমার পাঠকের এজলাসে চলছিল বহরমপুরের সুতপা হত্যা মামলার শুনানি। সাক্ষ্যগ্রহণ পর্বে সাক্ষী দেন মোট ১২ জন। একে একে সাক্ষী দিতে ওঠেন পুলিশ কনস্টেবল সুরজ ভৌমিক, কনস্টেবল নাসিম আক্তার এবং একটি টেলিফোন নেটওয়ার্ক কোম্পানির সিনিয়র নোডাল অফিসার রাজকুমার সিংহেরা। অভিযুক্তের আইনজীবীরা বিচারকের কাছে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির আবেদন করেন। তবে এই গোটা সময়টা ভাবলেশহীন দেখা গেল সুশান্তকে। আদালত থেকে বেরোনোর সময় তিনি বললেন, “মামলার বিচার চলছে। এই মুহূর্তে কোনও কথা বলব না।”
গত বছর ২মে শহিদ সূর্য সেন রোড দিয়ে মেসে ফিরছিলেন সুতপা। সিসি ক্যামেরাতে দেখা যায় তাঁকে অনুসরণ করছেন এক যুবক। পরে ওই যুবকের পরিচয় সামনে আসে। তিনি সুশান্ত। মেসের দরজার সামনেই সুতপার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপান ছাত্রীকে। এমন নৃশংস ঘটনায় রাজ্য জুড়ে শোরগোল শুরু হয়। পর দিনই গ্রেফতার হন সুশান্ত। জানা যায়, সুতপার পূর্ব পরিচিত তিনি। সম্পর্কের জটিলতা থেকে খুন করেন প্রেমিকাকে। ওই ঘটনার ৭৫ দিনের মাথায় বহরমপুর আদালতে ওই হত্যাকাণ্ডের চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। অভিযুক্ত সুশান্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন)-সহ একাধিক আইনে ধারায় চার্জশিট দাখিল করা হয়। আদালতে জমা পড়ে ৩৮৩ পাতার চার্জশিট। তাতে ৫৪ জন সাক্ষীর বয়ান রয়েছে।
সুশান্তের আইনজীবী পীযূষ ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা বিচারকের কাছে দ্রুত বিচারের আবেদন জানিয়েছি। আশা করি আমার মক্কেল ন্যায় বিচার পাবেন।’’ অন্য দিকে, মৃতার বাবা স্বাধীন চৌধুরী বলেন, ‘‘বিভিন্ন আইনি প্রক্রিয়ার জন্য অনেকটা সময় পেরিয়েছে। আশা করি, এ বার দ্রুত ন্যায়বিচার পাব।’’