টিউশন পড়তে যাওয়ার পথে খুন হলেন এক ছাত্রী! গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
টিউশন পড়তে যাওয়ার পথে আচমকা এক যুবক তাঁর পথ আটকে দাঁড়ান। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দা দিয়ে কোপ দিতে শুরু করেন সেই যুবক। ছাত্রীর গোঙানি শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসার আগেই পালিয়ে যান আততায়ী। পরে ওই ছাত্রীর মৃত্যুর পর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করলেন যুবক। জানালেন, তিনিই খুন করেছেন। শনিবার সকালে এমনই ঘটনা ঘটল নদিয়ার করিমপুরে। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার নাম স্নেহা চক্রবর্তী। ১৮ বছরের স্নেহা জমশেদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়তেন। তাঁকে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ব্রজেন মণ্ডল নামে এক যুবককে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ব্রজেনের সঙ্গে বেশ কয়েক বছরের সম্পর্ক ছিল স্নেহার।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার সকালে বাড়ি থেকে টিউশন পড়তে যাচ্ছিলেন স্নেহা। মাঝরাস্তায় তাঁর উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে চড়াও হন এক যুবক। অস্ত্রের এলোপাথাড়ি কোপে কয়েক মিনিটের মধ্যে রক্তে ভেসে যায় রাস্তা। ছাত্রীর চিৎকার শুনে স্থানীয় কয়েক জন ছুটে আসেন। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা ছাত্রীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন অভিযুক্ত।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, হোগলবাড়িয়া থানা এলাকার বাসিন্দা ব্রজেনের সঙ্গে বছর তিনেক ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল প্রতিবেশী স্নেহা ওরফে সোনালির। তবে সম্প্রতি তাঁদের সম্পর্কের অবনতি হয়। এমনকি, এ নিয়ে থানাপুলিশও হয়েছিল। তার পর থেকে স্নেহা আর ব্রজেনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী ছিল না। অন্য দিকে, ব্রজেন সম্পর্কে থাকার জন্য স্নেহাকে চাপ দিতেন বলে অভিযোগ। প্রত্যাখ্যাত হয়ে রাগের বশে স্নেহাকে তিনি খুন করেছেন বলে অভিযোগ।
শনিবারের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জোৎস্না সরকার নামে এক মহিলার কথায়, ‘‘বাড়িতে কাজ করছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। একটি মেয়ের চিৎকার শুনে ছুটে যাই। দেখি, একটি ছেলে মেয়েটিকে দা দিয়ে কোপাচ্ছে। আমি ওখানে পৌঁছতেই ছেলেটি দৌড়ে পালিয়ে যায়। ছেলে এবং মেয়ে, দু’জনেই আমার চেনা।’’ অন্য দিকে, মৃতার বাবা স্বপন চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘আমার মেয়েকে ওই ছেলেটি নিয়মিত উত্ত্যক্ত করত। এ নিয়ে আগে থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলাম। তবে এ ভাবে খুন করবে ভাবতে পারিনি। আমি ওর ফাঁসি চাই।’’ পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।