বেথুয়াডহরির জনসভায় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা এবং রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বৃহস্পতিবার। ছবি: প্রণব দেবনাথ
খোদ দলের সর্বভারতীয় সভাপতির সভা। নদিয়ার উত্তরে আয়োজিত সেই সভায় দলের নদিয়ার দক্ষিণ এলাকার একাধিক নেতা আমন্ত্রণ না-পাওয়ায় আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
সভায় ছিলেন না দলের অন্যতম মতুয়া মুখ তথা দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক মুকুটমনি অধিকারী। ডাক পাননি অসীম সরকারের মতো বিধায়কও।
পঞ্চায়েত ভোটকে পাখির চোখ করে নদিয়ার উত্তরে সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার জনসভার আয়োজন হয়েছিল। দলের ঐক্যবদ্ধ রূপ দেখানোটাও একটা লক্ষ্য ছিল। এ দিনের সভা ছিল নদিয়ার উত্তরের বেথুয়াডহরিতে। আয়োজক ছিল দলের নদিয়া উত্তর সংগঠনিক জেলা কমিটি। সেখানে দক্ষিণ সংগঠনিক জেলা থেকেও আমন্ত্রিত হয়েছিলেন অনেকেই। ছিলেন রানাঘাটের সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি জগন্নাথ সরকার, দলের নদিয়া দক্ষিণ সংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়, চাকদহের বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ-সহ অনেকেই। কিন্তু দেখা যায়নি রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীকে। উত্তরের তুলনায় নদিয়া দক্ষিণ অনেকটাই মতুয়া প্রভাবিত।
মতুয়া সমাজে বিজেপির অন্যতম ‘পোস্টার বয়’ মুকুটের অনুপস্থিতি অবশ্য প্রশ্ন তুলছে। দলের অন্দরে নদিয়া দক্ষিণে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরোধী শিবিরের লোক হিসাবে পরিচিত মুকুট। কিছুদিন আগেই দুই বিধায়ক মুকুটমনি অধিকারী, আশিস বিশ্বাস এবং নদিয়া দক্ষিণের প্রাক্তন জেলা সভাপতি অশোক চক্রবর্তীকে শোকজ করেছিল দলের নদিয়া দক্ষিণ জেলা কমিটি। পরে অবশ্য পিছিয়ে যেতে হয় তাঁদের।
মুকুট রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক। মুকুট কি ডাক পেয়েছিলেন? সরাসরি ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’-এ উত্তর এড়িয়েছেন চিকিৎসক বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘সব সভায় তো সবাইকে ডাকা যায় না, আর ডাকা হয়ও না। তা ছাড়া আমি দিল্লিতে ছিলাম। বিধানসভায় স্ট্যাণ্ডিং কমিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকেও আমাকে হাজির থাকতে হয়েছিল।’’সভায় আর এক গুরুত্বপূর্ণ অনুপস্থিতি ছিল হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকারের। তিনি অবশ্য ডাক পাননি বলে জানান। তাঁর কথায়, ‘‘সভা হয়েছে উত্তর সংগঠনিক জেলায়। সেই জন্যই হয়তো আমাদের জানাইনি।’’ আবার রানাঘাট উত্তর-পূর্বের বিধায়ক অসীম বিশ্বাস অবশ্য সভায় ডাক পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি যেতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল চিঠি দিয়ে। কিন্তু এ দিন স্ট্যান্ডিং কমিটির জরুরি বৈঠক থাকায় আমার যাওয়া হয়নি।’’
ডাক পাননি দলের নদিয়া দক্ষিণ সংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সভাপতি অশোক চক্রবর্তীও। দলের অন্দরে তিনিও দলের নদিয়া দক্ষিণ সংগঠনিক জেলার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরোধী শিবিরের লোক বলে পরিচিত। তিনি বলেন, "সাংগঠনিক ভাবে কোনও সূচনা পাইনি, তাই যাওয়া হয়নি।’’ উত্তরের সভাতেও কি দক্ষিণের কোন্দল ছাপ ফেলে গেল, পঞ্চায়েত ভোটের আগে সেই প্রশ্ন এখন সামনে উঠে এসেছে পদ্ম শিবিরের। বিজেপির নদিয়া উত্তর সংগঠনিক জেলার মুখপাত্র সন্দীপ মজুমদার বলেন, ‘‘সভা নদিয়া উত্তরে হয়েছে। তবে পরিচালনার বিষয়টি দেখেছেন প্রদেশ নেতৃত্ব। যতদূর জানি, সবাইকে ডাকা হয়েছে।’’