ইশারাতেই শব্দবাজির দরদস্তুর

চাকদহ বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থার সভাপতি বিবর্তন ভট্টাচার্যের কথায় অবশ্য, “রাজ্যে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ অনুমোদিত ৪৮টি বাজি কারখানা রয়েছে। কিন্তু সেগুলি ছাড়াও বহু জায়গায় বাজি তৈরি হয়।

Advertisement

সৌমিত্র সিকদার

গাংনাপুর শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৯ ০০:২২
Share:

শনিবার রাতেই শুরু হল বাজি পোড়ানো কৃষ্ণনগরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে এক বিক্রেতা শব্দ বাজির খোঁজ করছিলেন। দোকানদার এ দিকে-ওদিকে তাকিয়ে প্রথমে জানালেন, তাঁরা শব্দ বাজি বিক্রি করেন না। কিন্তু তাঁর চোখমুখ দেখে পোড় খাওয়া ক্রেতার ‘সত্যি’ বুঝতে দেরি হয় না। চোখের ইশারায় কথা হয় দু’জনার। গলা নামিয়ে বিক্রেতা শর্ত দেন, আতস বাজি বেশি পরিমাণে কিনলে তবেই শব্দ বাজি বিক্রি করবেন। ক্রেতাও রাজি। দোকানের পিছনের একটা ঘরে গিয়ে প্যাকেটে করে শব্দবাজি এনে ক্রেতার হাতে ধরিয়ে দেন বিক্রেতা। গত শনিবার দুপুরে গাংনাপুরের এক বাজির দোকানে দেখা গেল গোটা ঘটনাটি।

Advertisement

যতই প্রচার, ধরপাকড়, শাস্তির খাঁড়া থাকুক শব্দবাজির কেনাকাটা যে পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি তা প্রশাসনের একাংশ এবং পরিবেশরক্ষা আন্দোলনের কর্মীরা স্বীকার করছেন। প্রশাসনের এক কর্তাই জানালেন, মূলত দু’টি পথে রানাঘাট, তাহেরপুর-সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় শব্দবাজি ঢুকছে। এক,কলকাতা হয়ে সরাসরি। দুই, দক্ষিণ ২৪ পরগনার নুঙ্গি, ক্যানিং এবং উত্তর ২৪ পরগনার কাঁকিনাড়া, নৌহাটি হয়ে। যদিও রানাঘাটের পুলিশ সুপার ভিএসআর আনন্দনাগ বলেছেন, “শব্দ বাজি ফাটানোর বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ করা হয়েছে। সর্বত্র নজর রাখা হচ্ছে। ধরা পড়লে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

চাকদহ বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থার সভাপতি বিবর্তন ভট্টাচার্যের কথায় অবশ্য, “রাজ্যে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ অনুমোদিত ৪৮টি বাজি কারখানা রয়েছে। কিন্তু সেগুলি ছাড়াও বহু জায়গায় বাজি তৈরি হয়। এবং সে সব জায়গায় বেআইনি ভাবে প্রধানত শব্দবাজি বিক্রি হয়। আমরা নজর রাখছি। চাকদহ এং দত্তপুলিয়ায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত এই নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানানো যাবে। যে কেউ আমাদের ফোন করে শব্দবাজি ফাটানোর কথা জানতে পারেন। তাঁর মোবাইল নম্বর গোপন রাখা হবে। আমরা পুলিশকে সেই জায়গার কথা জানিয়ে দেব।”

Advertisement

রানাঘাট রেল বাজার সংযুক্ত ব্যবসায়ী সমিতির নেতা পিন্টু সরকারর শব্দবাজি বিক্রির কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “সামগ্রিক ভাবে বাজি বিক্রিই কমে গিয়েছে। প্রশাসন, পুলিশ প্রচার চালাচ্ছে। পাশপাশি মানুষের মধ্যেও সচেতনতা বেড়েছে। আগে যে ভাবে বাজি ফাটত এখন সে ভাবে ফাটতে দেখা যায় না।” গত বছর ১৬ সেপ্টেম্বর গাংনাপুরের বাজি কারখানায় ভয়ানক বিস্ফোরণ হয়। মৃত্যু হয় ২ জনের। কারখানায় উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে তিনটি দোকান সবে খুলেছে। সেখানকার এক ব্যসায়ী বলেন, “১৪ মাস পর দোকান খুলেছি। শুধু আতস বাজি বিক্রি করছি। কোনও শব্দ বাজি পাওয়া যাবে না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement