চাঁদা নেওয়ার রসিদ। নিজস্ব চিত্র।
স্কুল কবে খুলবে তা এখনও কেউ জানেন না। শিক্ষা দফতর কোনও নির্দেশিকা দেয়নি। করোনা এখনও দাপটের সঙ্গে রয়েছে। ভ্যাকসিন দেওয়াও শুরু হয়নি। এই রকম একটা জটিল, অস্থির অবস্থায় একাধিক সরকারি স্কুল সরস্বতী পুজোর চাঁদা নিতে শুরু করেছে ছাত্রছাত্রীদের থেকে। তাতেই অভিভাবকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। উঠছে প্রশ্ন।
করোনা-পরিস্থিতি থেকে গেলে পুজো হবে কী করে? তা হলে কি সরস্বতী পুজোর আগেই স্কুল খুলে যাবে? স্কুলগুলি কি সরস্বতী পুজো করার ঝুঁকি নেবে? যদি পুজো না হয় তা হলে চাঁদার টাকা কী হবে?
নদিয়া জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক)মৃণাল কান্তি সিংহরায় বলেন, ‘‘স্কুল সরস্বতী পুজোর আগে বা পুজোর সময় খুলবে কিনা সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত সরকারি নির্দেশিকা আসেনি, কাজেই স্কুলগুলি কেন এ কাজ করছেন আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি খোঁজ নেব ও প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
তেহট্টের বিভিন্ন এলাকায় স্কুলে পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণীর ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভর্তির ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রী-পিছু যে টাকা ধার্য করা হয়েছে তাতেও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। কারণ, করোনা ও লকডাউনে কাজ হারিয়েছেন অনেকেই। আনলক পর্বে কাজ পেয়েও আর্থিক অবস্থা ফেরেনি অনেকের। অনেকের আবার বেতন কমে গিয়েছে।
অভিভাবকদের অভিযোগ, এরই মধ্যে অনেক সরকারি স্কুল ফি-এর সঙ্গে সরস্বতী পুজোর চাঁদা বাবদ ৩০-৬০ টাকা নিচ্ছে। স্কুল-কলেজ কবে খুলবে সে বিষয়ে রাজ্য সরকার এখনও নির্দেশিকা দেয়নি। ছাত্র-ছাত্রীরা অনলাইনে ক্লাস করছে। পুজো তো অনলাইনে হতে পারে না। তা হলে? বেতাই পরিমল বাগচী স্মৃতি বিদ্যালয়, তেহট্ট উচ্চ বিদ্যালয়ের মতো অনেক স্কুলই এমন চাঁদা নিয়েছে।
স্কুল না খুললে কী করে পুজো হবে? পুজো না হলে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে কেন?
বেতাই পরিমল বাগচী স্মৃতি বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক দীপঙ্কর পাল বলেন, ‘‘বিভিন্ন খাতে কত টাকা লাগবে তা স্কুল কমিটি ঠিক করে। স্কুলের পুজো না হলে সেই টাকা স্কুলের উন্নয়নের কাজে লাগানো হবে।’’ আর তেহট্ট উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মানিক লাল ঘোষ বলেন, ‘‘এখনও সরস্বতী পুজো অনেক দেরি আছে, চাঁদা নিয়ে রাখলাম। দেখা যাক শিক্ষা দফতর কী পদক্ষেপ নেয়।’’