অবাধে চলছে মাটি কাটা। ট্রাক্টর বোঝাই মাটি বিক্রি হচ্ছে মোটা টাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, a দলের বরাভয়ে পুলিশ-প্রশাসনকে ঠুলি পরিয়ে চলছে অবাধ লুঠতরাজ। দেখে এল আনন্দবাজার।
sand smuggling

Sand Smuggling: কর্তার আশ্বাস সার, সর্ষের মধ্যেই ভূত?

চাপড়া থানার পুলিশ ১৫টি ট্রাক্টর ও দু’টি মাটি কাটার যন্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে। সেই সঙ্গে গ্রেফতার করেছে ১৯ জনকে। সংখ্যাটা নেহাতই কম না।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২২ ০৭:০৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

বালি আর পাথরের পাশাপাশি মাটি পাচারও বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সেই নির্দেশ থেকে গিয়েছে নির্দেশের স্তরেই। সেই নির্দেশ নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের বিশেষ সক্রিয়তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। সুঁটিয়ার বিলই তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ বলে তাদের দাবি। অনেকেই বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে যদি গুরুত্ব দেওয়া হত, তা হলে দিনের পর দিন চোখের সামনে দিনে-দুপুরে কেউ এ ভাবে বিল থেকে মাটি কেটে নিয়ে গিয়ে যেতে পারত না। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি মুখ্যমন্ত্রীর থেকেও স্থানীয় নেতৃত্বের কথায় বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ?

Advertisement

মাটি কাটা বন্ধ করতে সম্প্রতি প্রতিটি ব্লকেই তিন সদস্যের কমিটি গঠিত হয়েছে। সেই কমিটিতে আছেন সংশ্লিষ্ট থানার ওসি বা আইসি, বিডিও এবং বিএলএলআরও। মাটি কাটা সম্পর্কিত কোনও অভিযোগ হলে তাঁরাই বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেন বা তাঁদের উপরে সেই দায়িত্ব দেওয়া আছে। কিন্তু এই কমিটি তৈরি হওয়ার পরেও অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি বলে অভিযোগ।

চাপড়া থানার পুলিশ ১৫টি ট্রাক্টর ও দু’টি মাটি কাটার যন্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে। সেই সঙ্গে গ্রেফতার করেছে ১৯ জনকে। সংখ্যাটা নেহাতই কম না। তবে সেটাও প্রায় মাস দেড়েক আগের গল্প। তারপর থেকে আর তেমন নজরদারি নেই বলেই অভিযোগ উঠছে। যদিও চাপড়া থানার পুলিশের দাবি, তারা যখন যেখানে মাটি কাটার খবর পাচ্ছে তখনই সেখানে গিয়ে তা বন্ধ করে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ করছে। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার ঈশানী পালের বক্তব্য, “মাটি কাটা ও পাচার বন্ধ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে। মাটি কাটার খবর পেলেই সঙ্গে সঙ্গে অভিযান চালানো হচ্ছে।”

Advertisement

পুলিশের পাশাপাশি অভিযোগ উঠছে ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের ভূমিকা নিয়েও। মাটি কাটা বন্ধ করার দায়িত্ব তাদেরও। প্রশ্ন উঠছে, তাদের কাছে কেন খবর থাকছে না? মঙ্গলবার সুঁটিয়ায় মাটি কাটার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ঘটনাস্থলে তদন্তে যান ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক (বিএলএলআরও) এবং পুলিশকর্মীরা। চাপড়ার বিএলএলআরও গোকুলানন্দ মণ্ডল বলেন, “আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। মাটি কাটার প্রমাণ পেলেও কাউকে সেখানে পাওয়া যায়নি। কোন ট্রাক্টর বা মাটি কাটার যন্ত্রও ঘটনাস্থলে ছিল না।” তাঁর আশ্বাস , “আমরা গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।”

আর এখানেই উঠে আসছে আরও একটা প্রশ্ন। অনেক ক্ষেত্রেই বিএলএলআরও এবং পুলিশ পৌঁছনোর আগেই মাটি কাটা বন্ধ হয়ে যায়, সরিয়ে নেওয়া হয় ট্রাক্টর বা মাটি কাটার যন্ত্র। তাহলে কি সর্ষের মধ্যেই ভূত? যদিও সে কথা মানতে নারাজ গোকুলানন্দ। তিনি বলেন, “একাধিক জায়গায় হানা দিয়ে বেশ কিছু জরিমানাও করা হয়েছে।” আর বিডিও দীনেশ দে বলছেন, “আমরা সব সময়ে কমিটিতে আলোচনা করি। পুলিশ এবং বিএলএলআরও-র তরফে বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপও করা হয়েছে। আশা করছি, মাটি কাটা পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে পারব।”

কিন্তু কবে? সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement