—নিজস্ব চিত্র।
এক হিন্দু প্রৌঢ়ার শেষকৃত্যে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন দীর্ঘদিনের মুসলিম পড়শিরাই। শেষকাজের যাবতীয় খরচও বহন করলেন তাঁরা। মুর্শিদাবাদ জেলার সমশেরগঞ্জের এক গ্রামে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এ ছবিই দেখা শুক্রবার।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার সকালে সমশেরগঞ্জ থানার বোগদাদনগর গ্রামে পবিত্র রবিদাস নামে এক মহিলার মৃত্যু হয়। ৫৫ বছরের ওই মহিলা দীর্ঘদিন ধরেই ক্যানসার আক্রান্ত ছিলেন। তাঁর স্বামী বিনোদ রবিদাস জানিয়েছেন, প্রায় ৫০ বছর ধরে গ্রামের একমাত্র হিন্দু পরিবার হলেও সব সময় মুসলিম পড়শিদের পাশে পেয়েছেন। স্ত্রী অসুস্থ থাকাকালীনও তাঁদের যাবতীয় সাহায্য করেছেন এই পড়শিরাই।
শুক্রবার সকালে বিনোদের পরিবারে মৃত্যুর খবর শুনে ছুটে আসেন এলাকার মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষজন। স্থানীয় মসজিদের ইমাম মৌলানা ফেকারুল ইসলাম, গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ সাদেমান আলি, সফিকুল ইসলাম, নুর ইসলামেরা। ওই প্রৌঢ়ার শেষকৃত্যের যাবতীয় বন্দোবস্তও করেন তাঁরা। আর্থিক ভাবে অনটনে থাকা পরিবারের ওই সদস্যার শেষকৃত্যের খরচও বহন করেন এলাকাবাসীরা। নিজের দুঃসময়ে পড়শিদের পাশে পেয়ে তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বিনোদ। তিনি বলেন, ‘‘এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে বরাবরই আমাদের সদ্ভাব রয়েছে। স্ত্রীর শেষকাজ করার বিষয়ে তাঁরাই আশ্বাস দিয়েছেন। আমাকে টাকাপয়সা দিয়েও সাহায্য করেছেন। সে জন্য সকলকেই ধন্যবাদ জানাই।’’
পড়শির বিপদে পাশে ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ সাদেমান আলিও। তিনি বলেন, ‘‘এই মুসলিম এলাকায় গত পাঁচ দশক ধরে মাত্র এক ঘর হিন্দু পরিবার রয়েছে। এত বছরে এ অঞ্চলে কখনওই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে দিইনি। দীর্ঘদিন ধরেই বিনোদের স্ত্রী ক্যানসারে ভুগছিলেন। জীবিত থাকাকালীন আমাদের গ্রামের ছেলেরা তাঁর পরিবারকে সমস্ত রকমের সহযোগিতা করেছে। তাঁর শেষকাজের জন্য যাবতীয় খরচও বহন করেছে গ্রামের ছেলেরাই।’’