সাগরদিঘিতে বিক্ষোভের মুখে সুকান্তের কনভয়। —নিজস্ব ছবি।
সাগরদিঘির উপনির্বাচনের প্রচারে গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেই সময় তাঁর গাড়িতে একটি ছাগল পিষে মারা যায়। এই অভিযোগ তুলে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখান তাঁর কনভয়কে ঘিরে। শেষমেশ পুলিশের মধ্যস্থতায় পাঁচ হাজার টাকা ‘জরিমানা’ দেওয়ার পরেই যেতে দেওয়া হল সুকান্তের গাড়িকে! বিজেপির অবশ্য দাবি, একটি মরা ছাগলকে কনভয়ের সামনে ফেলে রেখে জোর করে টাকা আদায় করা হয়েছে। শাসকদলের বিরুদ্ধে ‘নিম্নরুচির রাজনীতি’ করার অভিযোগও তুলেছেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার সাগরদিঘি উপনির্বাচনের প্রচারের শেষ দিনে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কাবিলপুর ও বালিয়া এলাকায় যাওয়ার কথা ছিল সুকান্তের। তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরাও ওই পথে বিজেপি নেতাকে কালো পতাকা ও গো ব্যাক স্লোগান দেওয়ার জন্য তৈরি ছিলেন। সুকান্তের গন্তব্যের পথেই পড়ে তাঁতিবিড়াল গ্রাম। অভিযোগ, ওই গ্রামের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সাংসদের কনভয় একটি ছাগলকে পিষে দেয়।
তাতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকায়। পুলিশের সামনেই সুকান্তের কনভয় ঘিরে বিক্ষোভ দেখান শাসকদলের কর্মীরা। সাংসদের কাছ থেকে জরিমানা দাবি করেন তাঁরা। শেষমেশ পুলিশের মধ্যস্থতায় ৫ হাজার টাকায় দফারফা হয়। প্রকাশ্যে আসা একটি ভিডিয়োয় সুকান্তের কনভয়ের সঙ্গে থাকা এক ব্যক্তিকে বিক্ষোভকারীদের হাতে টাকা তুলে দিতেও দেখা গিয়েছে।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা মণিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘খুব জোরে গাড়ি চালাচ্ছিল ওরা। আমরা আসতে যেতে বলেছিলাম। উল্টে একটা ছাগলকে পিষে দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল! আমরা ঘিরে ধরে টাকা আদায় করেছি।’’
বিজেপির বক্তব্য, জরিমানা কিছু নয়, চিত্রনাট্য তৈরি করে জোর করে টাকা আদায় করা হয়েছে। বিজেপির জেলা সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘পুলিশের উস্কানিতে তৃণমূলের সমর্থকরা আজ যেটা করল, তা রাজ্য প্রশাসনের লজ্জা। সুকান্তদার কনভয়ে পরিকল্পিত ভাবে একটা মরা ছাগল ফেলে দিয়ে জোরপূর্বক ৫ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। আমরা কোনও ঝামেলায় জড়াতে চাইনি। তাই টাকা দিয়ে বেরিয়ে এসেছি।’’ সুকান্তও বলেন, ‘‘অত্যন্ত নিম্নরুচির রাজনীতি। এ সব নিয়ে মন্তব্য করতেও ঘেন্না লাগছে। যাঁরা গো ব্যাক স্লোগান দিচ্ছেন, তাঁদের আত্মীয়-পরিজনই পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করছেন। কোথা থেকে সাজিয়ে কী সব করছে এঁরা!’’
এই ঘটনা প্রসঙ্গে জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা আর পাইলট কার আছে বলেই ইচ্ছে মতো গতিতে গাড়ি ছোটানো যায় না। ঠিক কী হয়েছে, আমি আরও খোঁজখবর নিচ্ছি।’’