Sagardighi By Election

উপনির্বাচনের আঁচে ফুটছে সাগরদিঘি

বালিয়ায় তখন প্রচারে জোর হাওয়া তুলে এগিয়ে চলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তার সঙ্গে রয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাফুজা খাতুন।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

সাগরদিঘি শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:০৯
Share:

কেউ পুবে তো কেউ পশ্চিমে। কেউ বা সদরে, কেউ বা গ্রাম মোরগ্রামের মতো প্রত্যন্ত এলাকায়।বৃহস্পতিবার উপনির্বাচনের আঁচে টগবগ করে ফুটল গোটা সাগরদিঘি।

সেই সঙ্গে চলল নেতাদের মধ্যে পরস্পরকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ। বিরোধীদের দাবি, নিজের গ্রাম সমসাবাদেই ভোটে হারবেন তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাই বৃহস্পতিবার সমসাবাদে দেবাশিসের বাড়ির পাশ থেকেই মিছিলের আয়োজন ছিল তৃণমূলের। মিছিলে যোগ দিতে এদিন সাগরদিঘিতে আসেন সাংসদ অসিত মাল, লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ। রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। জঙ্গিপুরের তৃণমূল চেয়ারম্যান কানাই চন্দ্র মণ্ডলের নেতৃত্বে মিছিল যত সাগরদিঘির দিকে এগিয়েছে ততই তা বেড়েছে কলেবরে।অসিতবাবু বলছেন, “নিজের গ্রামেই নাকি ভোট নেই তৃণমূল প্রার্থীর, বিরোধীদের এই রটনার জবাব দিতেই এ দিন সাগরদিঘিতে আসা।” অভিজিৎ সিংহের তোপ, “৭৪টি প্রকল্পের কোনও না কোনও প্রকল্প ঢুকেছে প্রতিটি বাড়িতে, যা সারা দেশের কোথাও নেই। এই মন্ত্রই আমাদের জয়ের চাবিকাঠি।” আরও এককাঠি গলা চড়িয়ে বিধায়ক কানাইচন্দ্র মণ্ডল বলছেন, “দেবাশিসের গ্রামে দেবাশিস জেতে কি না সেটা দেখাতেই এই মিছিল বিরোধীদের অপপ্রচারের জবাব। সাগরদিঘিতে জেতার খোয়াব দেখছেন অধীর চৌধুরী। লিখে নিন বহরমপুরে এবার তিনি হারবেন নিজেই লোকসভায়। তাই বিজেপিকে তোয়াজ করে ম্যানেজ করে বৈতরণী পার হতে চাইছেন।”

ঠিক তখনই যুগোর গ্রামে অধীর চৌধুরীর জনসভাতেও সুর সপ্তমে। সে সভাতেও জমজমাট ভিড়। অধীর বলছেন, “মেরুকরণের ভোটে জয় পেয়েছিল তৃণমূল। ভয় ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে ভোট নিয়েছিল তৃণমূল ও বিজেপি। মুর্শিদাবাদ জেলা আব্দুস সাত্তারের জেলা। বার বার কংগ্রেসকে সমর্থন করেছে। গত নির্বাচনে কংগ্রেস হেরে গিয়েছে, কিন্তু হারিয়ে যায়নি। তার প্রমাণ দিচ্ছে এবারে সাগরদিঘি।”

বালিয়ায় তখন প্রচারে জোর হাওয়া তুলে এগিয়ে চলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তার সঙ্গে রয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাফুজা খাতুন। সুকান্তের মুখে তখন সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের কথা। বলছেন, “গত নির্বাচনে সাগরদিঘিতে প্রচুর সংখ্যায় সংখ্যালঘুরা সমর্থন করেছিলেন তৃণমূলকে। কিন্তু ভোটে জেতার পর থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রাদায়ের মানুষের উপর অত্যাচার বেড়েছে এ রাজ্যে। এমনকি আইএসএফের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি মুসলিমদের ধর্মগুরু পরিবারের সন্তান। তাঁকে পর্যন্ত তৃণমূল একের পর এক মিথ্যে মামলা দিয়ে তার জামিন হতে দিচ্ছে না। বগটুই কাণ্ডে মানুষদের জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে।”

নেতাদের বাক্যবাণে যখন উত্তপ্ত সাগরদিঘি ঠিক তখনই অন্য ধরনের প্রচারে বোখারা ২ অঞ্চলে চায়ের দোকানে গল্প গুজবে মজলিশি প্রচারে ব্যস্ত জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ মৃদুভাষী খলিলুর রহমান। তিনি বলছেন, “এ এক ধরনের প্রচার। মানুষের সঙ্গে মিশে থেকে তাদের কাছে পৌঁছনো। সেই প্রচারেই রয়েছি আমি।” একই ভাবে প্রার্থী দেবাশিসের ব্যস্ততা তখন গ্রাম মোরগ্রামে। কেউ তার গলায় মালা পরাচ্ছেন। কেউ মিষ্টিমুখ করাচ্ছেন। মাঠে ধান পুঁতছিলেন বিফল মাল। জল ভেঙে নিলেন তার আর্শীবাদ।

কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের দাবি, পাটকেলডাঙা তাদের শক্ত ঘাঁটি। আজ দুপুর পর্যন্ত বাইরন কাটালেন সেখানেই। কখনও হুড খোলা গাড়িতে, কখনও পায়ে হেঁটে কারুর ঘরের উঠোনে। এ দিন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বাইরনের একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে সমাজ মাধ্যমে। তার সঙ্গে লেখা বিজেপি ও কংগ্রেসের আঁতাতের গল্প।বাইরন বলছেন, “আমি ব্যবসায়ী মানুষ। আমার ফেসবুক খুললেই দেখবেন শুভেন্দু কেন, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, সুব্রত সাহা সহ বিভিন্ন দলের বহু নেতার সঙ্গে আমার ছবি। সবাই আমার কাছে এসেছে। আমিও সামাজিক সেবার কারণে তাদের কাছে গেছি। এ সব বহু পুরনো ছবি। কিছু মানুষ হেরে যাওয়ার ভয়ে এসব ছড়াচ্ছে ।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন