সেই বোর্ড। —নিজস্ব চিত্র।
সদ্য বসানো হয়েছে উদ্বোধনী বোর্ড। তাতে জ্বলজ্বল করছে প্রকল্পের খরচের হিসাব। কিন্তু গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বোর্ড বসানো হলেও তৈরিই হয়নি রাস্তা। তাহলে রাস্তা কোথায় গেল? প্রশাসনের সাফাই, রাস্তা হয়েছে অন্যত্র। এক স্থানে উদ্বোধন করে, অন্যত্র রাস্তা করা যায় কি না তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
ঘটনা, মুর্শিদাবাদের সুতি এক নম্বর ব্লকের বহুতালি পঞ্চায়েতের। ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা বুধবার রাস্তা অবরোধ করেন। পুলিশ এবং জয়েন্ট বিডিও পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদ জেলার সুতি ১ ব্লকের বহুতালি পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সাখোপাড়া থেকে বহুতালি পীড়তলা পর্যন্ত প্রায় ১০০০ মিটার রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। টেন্ডারও করে সুতি পঞ্চায়েত সমিতি। নিয়ম মেনে টেন্ডার পায় একটি ঠিকাদারি সংস্থা। গত ২৯ মার্চ রাস্তার উদ্বোধন হয়। প্রকল্পের যে শিডিউল বোর্ড টাঙানো হয়েছে, সেখানে ১০০০ মিটার রাস্তা তৈরির জন্য ৩৫ লক্ষ ৯৩ হাজার ২৫৩.৪৭ টাকা খরচের কথা লেখা আছে। কিন্তু বাস্তবে সেখানে কোনও রাস্তা না থাকায় রাস্তা তৈরির দাবিতে বুধবার বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা।
বিডিওর দাবি, উদ্বোধনী বোর্ডে যে জায়গার নাম উল্লেখ আছে সেখানে রাস্তা না হলেও অন্যত্র রাস্তার কাজ করা হয়েছে। এক জায়গায় প্রকল্পের অনুমোদন নিয়ে অন্য জায়গায় কাজ করা যায় কিনা সে নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।
বিক্ষোভকারী গ্রামবাসী মনিরুল মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রথমে দু’এক দিন ইঞ্জিনিয়ার সাহেব ঘোরাঘুরি করলেন। তার পরে ছবি তুলে চলে গেলেন। আমাদের রাস্তার টাকা সবটা আত্মসাৎ করা হয়েছে। অবিলম্বে রাস্তা না করলে বিক্ষোভ চলবে।’’
সুতি ১ নম্বর ব্লকের বিডিও অরূপ সাহা বলেন, ‘‘প্রকল্পের বোর্ডে যে জায়গার নাম উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে রাস্তা হয়নি ঠিকই, তবে ওই অর্থে অন্য জায়গায় রাস্তা হয়েছে। গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ অযৌক্তিক।’’
তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘সমস্ত গ্রামীণ রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কারের ব্যাপারে সরকার যথাযথ উদ্যোগ নিয়েছে। কোথাও কাজ না হলে তা প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’’
বিজেপির শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘এ ভাবেই কয়েক হাজার প্রকল্প কারচুপি করে কয়েকশো কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে প্রশাসন। পঞ্চায়েত সমিতি ও বিডিওর যোগসাজশেই এই কাণ্ড।’’