—প্রতীকী চিত্র।
কেন্দ্রীয় বাজেটে গঙ্গার ভাঙন নিয়ে কোনও উল্লেখ না থাকায় হতাশ শমসেরগঞ্জ, ধুলিয়ানের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলির বাসিন্দারা।
যদিও কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের দেওয়া তথ্যে দাবি, এ রাজ্যে বন্যা নিয়ন্ত্রণের ১৮টি প্রকল্পে রাজ্যকে মোট ১,০৫১ কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্র। গত ১৫ বছরে গঙ্গার ভাঙনে ধস নেমেছে ১,৪৮০ হেক্টর জমিতে। পদ্মা নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০টি ব্লক এবং কয়েকটি পুর এলাকা। ওই মন্ত্রকের আরও দাবি, কেন্দ্রের সহায়তায় .৯৩৭ লক্ষ হেক্টর জমি এবং প্রায় ২ লক্ষ ৩৫ হাজার বাসিন্দাকে গৃহহারা হওয়া থেকে রক্ষা করা গিয়েছে।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে অনেক আশা ছিল ভাঙন-কবলিত এলাকার মানুষের। তাঁরা ভেবেছিলেন, গঙ্গা এবং পদ্মার ভাঙন প্রতিরোধে কেন্দ্র হয় তো কিছু অর্থ বরাদ্দ করবে বাজেটে। সোমবার লোকসভায় জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমান বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। কিন্তু এ দিন কানাকড়ি অর্থ বরাদ না হওয়ায় হতাশ তিনিও। বাজেট পেশ হওয়ার পরে সংসদ থেকে বেরিয়ে ফোনে খলিলুর বলেন, “বিহারকে বন্যা ও ভাঙন রোধে ১১,৫০০ কোটি টাকা দিক কেন্দ্র, তাতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু মুর্শিদাবাদে ভাঙন রোধে কানাকড়িও বরাদ্দ না করে এই জেলার মানুষের সঙ্গে অবিচার করল কেন্দ্রীয় সরকার। এ নিয়ে সংসদে লড়াইয়ের পাশাপাশি এলাকায় গিয়েও আন্দোলন করব। সকলেরই উচিত, কেন্দ্রের এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে পথে নামা।” শমসেরগঞ্জ যাঁর সংসদীয় এলাকার মধ্যে পড়ে দক্ষিণ মালদহ কেন্দ্রে কংগ্রেসের সেই সাংসদ ঈশাখান চৌধুরীকে দিল্লিতে একাধিক বার ফোন করা হলেও তাঁর ফোন বেজে যায়। মেসেজেরও উত্তর মেলেনি। শমসেরগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিএম নেতা তোয়াব আলি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলছেন ১০০ কোটি টাকা দিলাম, কেন্দ্র বলছে ১৬৫ কোটি টাকা দিয়েছি, সে সব টাকা গেল কোথায়?’’
কংগ্রেসের শমসেরগঞ্জের ব্লক সভাপতি ইমাম হোসেন বলেন, “বাজেট নিয়ে কোনও আশা ছিল না, তাই হতাশও হইনি। আমরা মানুষের পাশে থেকেই প্রতিবাদ করব।”
জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহকারী সভাপতি মিলন ঘোষের প্রতিক্রিয়া, “জঙ্গিপুরের সাংসদ লোকসভায় ভাঙন নিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু ভাঙন নিয়ে কেন্দ্রকে চাপ দিতে হবে রাজ্য সরকারকেই। রাজ্য সরকার তো তা করে না। মুখ্যমন্ত্রীর বরাদ্দ করা ১০০ কোটি টাকা গেল কোথায়! কেন্দ্রের দেওয়া ১৬৫ কোটি টাকাতেই বা কী কাজ হল?’’ এরপরই তিনি দাবি করেন, ‘‘গত তিন বছরে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার কত টাকা দিয়েছে, কত টাকা খরচ হয়েছে, তা নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক রাজ্য সরকার। ভাঙন রুখতে বালির বস্তা ফেলে কিছু হবে না। এ ভাবে চললে কয়েক বছরের মধ্যেই ধুলিয়ান নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।’’