বিড়াল ধরতে ব্যস্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা। — ফাইল চিত্র।
মার্জারকুলকে সম্মার্জনী। বিড়ালের উৎপাতে অতিষ্ঠ নদিয়ার রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের রোগী থেকে শুরু করে চিকিৎসক, নার্স সকলেই। তাই বিড়ালের পালকে ‘ঝেঁটিয়ে বিদেয়’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দিন কয়েক ধরে চলছে তারই তোডজোড়।
গায়ে অ্যাপ্রন, হাতে বিশেষ সরঞ্জাম। এই অবস্থায় হাসপাতালের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ছোটাছুটি করছেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা। তাঁদের লক্ষ্য, বিড়াল ধরে নির্দিষ্ট স্থানে ছেড়ে আসা। এই কাজের জন্য বরাত পাওয়া স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে দেওয়া হচ্ছে বিড়ালপ্রতি ১৫০ টাকা। এখন হাসপাতালে জোরকদমে চলছে সেই কাজ। দু-এক দিনের মধ্যেই বিড়ালমুক্ত হবে হাসপাতাল। এমনটাই দাবি ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির। গত ফেব্রুয়ারিতেই ওই হাসপাতালে শুরু হয়েছিল প্রথম দফার ‘বিড়াল বিদায়’ অভিযান। তার পর বুধবার থেকে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় দফা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রানাঘাট হাসপাতালের একাধিক ওয়ার্ডে গত কয়েক মাসের মধ্যে বিড়ালের উৎপাত মারাত্মক আকার নিয়েছে। রোগীর শয্যা থেকে শুরু করে হাসপাতালের রান্নাঘর সর্বত্র অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে কয়েকশো বিড়াল। প্রাথমিক ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি বিড়ালের অবাধ বিচরণ। তাই রোগী নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার কথা মাথায় রেখে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে বিড়াল ধরার দায়িত্ব দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের সুপার প্রহ্লাদ অধিকারী বলেন, ‘‘এর আগে এই বিড়ালের জন্য হাসপাতাল সংবাদের শিরোনামে এসেছিল। তার পর থেকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বিড়ালগুলি ধরে একটি গ্রামের মধ্যে রাখা হচ্ছে নিরাপদে।’’ তাদের উপর নজরদারিও চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপ নিয়ে সরব পশুপ্রেমী সংগঠনগুলি। এমনই এক সংগঠনের সদস্য অমিয় মহাপাত্রের কথায়, ‘‘বিড়ালগুলিকে উদ্ধার করা যেতে পারে। তবে এ ভাবে বন্দি করা যায় না। আর তাদের স্বাস্থ্যের কথাও মাথায় রাখতে হবে।’’ সব শুনে নদিয়া-মুর্শিদাবাদ ডিভিশনের বনাধিকারিক প্রদীপ বাউড়ি বলেন, ‘‘বিড়াল গৃহপালিত পশু। তাই এ ক্ষেত্রে বনবিভাগের সেই অর্থে কিছু করার নেই।’’