আব্দুর রহিম বক্সী। — নিজস্ব চিত্র।
কংগ্রেস, সিপিএমকে ধরুন। আর আচ্ছা করে ‘দাওয়াই’ খাওয়ান। যাতে আর কোনও দিন কংগ্রেসের নাম নিয়ে পাড়ায় ঢুকতে না পারে। এই ভাষাতেই বিরোধী রাজনৈতিক দলকে হুঁশিয়ারি দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের মালদহ জেলার সভাপতি তথা মালতীপুরের বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সীর বিরুদ্ধে। রহিম বক্সীর এই মন্তব্যের একযোগে সমালোচনা করেছে বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপি।
বুধবার রতুয়ার কুতুবগঞ্জে যোগদান কর্মসূচি ছিল তৃণমূলের। সেই সভায় উপস্থিত দলীয় কর্মীদের রহিম বক্সীর নির্দেশ, ‘‘যাঁরা আপনাদের বাড়িতে যাবে সেই কংগ্রেস, সিপিএমকে ধরুন। আর আচ্ছা করে দাওয়াই খাওয়ান। যাতে করে আরও কোনও দিন কংগ্রেসের নাম নিয়ে পাড়ায় ঢুকতে না পারে। ঘুরতে না পারে। এমন শাস্তি দিতে হবে, যাতে তারা বুঝতে পারে মানুষকে আর ঠকানো যাবে না।’’ এই সূত্রেই তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল তোমাদের হুঁশিয়ার করে দিচ্ছে, গ্রামের মানুষকে যদি বোকা বানানোর চেষ্টা করো, তা হলে গ্রামের রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে তোমাদের বিচার করা হবে। তোমাদের সেখানেই শাস্তি দেওয়া হবে।’’
রহিম বক্সীর এ হেন মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। ওই মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘চায়ের দোকানে যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গালিগালাজ করছেন সে বিনা পয়সার চাল খায়, লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা নেয়, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড ব্যবহার করে, কন্যাশ্রীর টাকা নেয়, সবুজ সাথীর সাইকেল নেয়। যারা এই সব কিছু ভোগ করছে, তারা মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে। তাই বলছি, গ্রামের মানুষ সচেতন হয়ে গিয়েছে। এদের ধরে রাজনীতির দাওয়াই দিতে হবে। তাতে ওরা ঠান্ডা হবে। মানুষকে ভুল বোঝতে পারবে না।’’
তৃণমূল বিধায়ককে বিঁধে সিপিএমের মালদহের জেলা সম্পাদক অম্বর মৈত্র বলেন, ‘‘ওদের বিচার কে করবে? দুর্নীতির পাহাড়ে পশ্চিম বাংলা। কে জবাব দেবে? তাই ওরা এখন আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু মানুষ বুঝে গিয়েছে।’’ বামেদের সুরে সুর মিলিয়ে কংগ্রেস নেতা অর্জুন হালদারের মন্তব্য, ‘‘তৃণমূলের জেলা সভাপতির সঙ্গে পুলিশ, প্রশাসন আছে। কিন্তু সম্প্রতি সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফলে বোঝা যাচ্ছে সংখ্যালঘুরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। ভোটে ভাঙন দেখে রহিম বক্সীর মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। তাই ভুলভাল বকছেন।’’
বিজেপির মালদহ জেলার সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ির আবার মন্তব্য, ‘‘ওঁর (আব্দুর রহিম বক্সী) পায়ের তলার মাটি নেই। মানুষ সজাগ হচ্ছে। সেটা সাগরদিঘিতে বোঝা গিয়েছে। যাঁরা আজ আস্ফালন করছেন তাঁদের শায়েস্তা করে দেবে গ্রামের মানুষ।’’