প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের তিনটি জেলা মুর্শিদাবাদ, নদিয়া ও উত্তর ২৪ পরগনাকে জুড়ে নতুন ৩১২ নম্বর জাতীয় সড়ক তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্র।
সীমান্ত এলাকা ঘেঁষে জঙ্গিপুর থেকে বসিরহাট পর্যন্ত এই সড়ক তৈরির সিদ্ধান্তের কথা গত ৪ ফেব্রুয়ারি ভার্চুয়াল বৈঠক করে জানিয়ে দিয়েছিলেন খোদ কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রী নিতীন গডকড়ি। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাও সিলমোহর দিয়েছে এই নয়া প্রকল্পে। এর জন্য প্রাথমিক ভাবে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৪, ৫০০ কোটি টাকা।
ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে এই সড়ক নির্মাণের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জানানো হয়েছে, ওই সড়ক পথের ডিপিআর তৈরির পরে রুটের পরিবর্তন না হলেও ৩১৮ থেকে সড়কের দৈর্ঘ্য বেড়ে হয়েছে ৩২৯ কিলোমিটার। জাতীয় সড়ক মন্ত্রণালয়ের রাজ্যের এক কর্তা জানান, ৪ ফেব্রুয়ারি নিতীন গডকড়ি বলেন, “জঙ্গিপুর থেকে বসিরহাট পর্যন্ত চার লেনের ৩১৮ কিলোমিটারের এই সড়কটি ডিপিআর তৈরির কাজ শেষ হয়ে যাবে ৬ মাসের মধ্যে। ২০২৪ সালের মধ্যে সড়কের নির্মাণ কাজটিও শেষ করতে হবে। এর জন্য প্রাথমিক আর্থিক বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৪,৫০০ কোটি টাকা।”
কেন্দ্রীয় সড়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গিপুর থেকে লালগোলা, ভগবানগোলা হয়ে যে ১১ নম্বর রাজ্য সড়কটি গেছে বহরমপুরের দিকে সেটিকেই চওড়ায় দুই দিকে ৪৫ ফুট করে বাড়িয়ে ৯০ ফুটের সড়ক তৈরি হবে এটি। সূত্রের খবর, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বিকল্প পথ হিসেবে এটি তৈরি হবে বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পথ বরাবর, যাতে জরুরি পরিস্থিতিতেও সেই বিকল্প জাতীয় সড়ক ব্যবহার করা যায়।
সড়কটি শুরু হবে জঙ্গিপুরের উমরপুর থেকে। সড়কটি যাবে লালগোলা, ভগবানগোলা, লালবাগ, ডোমকল, জলঙ্গি, করিমপুর, তেহট্ট, কৃষ্ণনগর, হাঁসখালি, বগুলা, বনগাঁ, স্বরূপনগর, তেঁতুলিয়া হয়ে বসিরহাট পর্যন্ত। নতুন জাতীয় সড়কটি সংযুক্ত হবে বসিরহাট থেকে সরাসরি পেট্রাপোল সড়কটির সঙ্গে। এই সড়কে বাস, ছোট গাড়ি সবই চলবে। এর ফলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর চাপ অনেকটা কমবে বলে ধরা হচ্ছে।
এই ফোর লেন তৈরি হলে উমরপুর থেকে রঘুনাথগঞ্জ ফুলতলা পর্যন্ত অসহনীয় যানজটও কমবে। উপকৃত হবেন অতিব্যস্ত করিমপুর-কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়ক পথটির ব্যবহারকারীরাও। কারণ সেখানেও ট্রাফিকের প্রচণ্ড চাপ রয়েছে। জঙ্গিপুরের রাজ্য পূর্ত দফতরের সহকারি বাস্তুকার অসীম কুমার ভকত বলেন, “ওই নয়া সড়ক পথটি ফোর লেনের জাতীয় সড়ক হিসেবে গড়ে উঠলে তাতে বিরাট এলাকার মানুষ উপকৃত হবে। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরও চাপ অনেকটাই কমবে।”
বিএসএফের সূত্রে জানা গেছে, সীমান্ত বরাবর এই জাতীয় সড়ক তৈরি হওয়ায় সীমান্ত পথে যাতায়াত সহজ হবে।
সীমান্ত সুরক্ষাতেও এই সড়ক পথটি যথেষ্ট উপকারে আসবে। এর আগে ভারতমালা প্রকল্প গড়ে জঙ্গিপুর থেকে একটি চার লেনের জাতীয় সড়ক তৈরির পরিকল্পনা হয় ২০১৭ সালে। সূত্রের খবর, জমি অধিগ্রহণের সমস্যার কারণে সেই সড়ক প্রকল্পটি বাতিল হয়ে গিয়েছে। প্রস্তাবিত নতুন সড়কটি রাজ্য সড়কের উপর দিয়েই যাবে বলে জমি অধিগ্রহণের সমস্যাও অনেকটাই কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।