শেষ প্রচারেও যুযুধান

নেতার চমক বনাম সংগঠন

জনা চারেক যুবককে মঞ্চে টেনে শেষ বিকেলে জোটের দেওয়ালে একটা চুলচেরা ফাটল ধরানোর শেষ চেষ্টা করে গেলেন তিনি— ‘‘মনে পড়ছে, এঁরা সবাই কংগ্রেস করতেন, সিপিএম কী মারই না মেরেছিল, কই সেই দাগ গুলো দেখান....।’’

Advertisement

সুজাউদ্দিন

ডোমকল শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৭ ০১:০৮
Share:

অপেক্ষা: দুয়ারে ভোট। অপেক্ষা তারই। ডোমকলে। গৌতম প্রামাণিক

জনা চারেক যুবককে মঞ্চে টেনে শেষ বিকেলে জোটের দেওয়ালে একটা চুলচেরা ফাটল ধরানোর শেষ চেষ্টা করে গেলেন তিনি— ‘‘মনে পড়ছে, এঁরা সবাই কংগ্রেস করতেন, সিপিএম কী মারই না মেরেছিল, কই সেই দাগ গুলো দেখান....।’’ দল বদলে সেই যুবকেরা এখন শাসক দলে। শুভেন্দু অধিকারী প্রশ্নটা রেখে গেলেন, এর পরেও কংগ্রেস-সিপিএম ভাই ভাই?

Advertisement

ডোমকল জনকল্যাণ ময়দানে ভিড়টা ভাঙতেই চোখে পড়ছে পিলপিলে একটা জনতা, যাঁকে ঘিরে হাঁটছে তিনি চেনা রোদ চশমার আড়ালে আরও চেনা অধীর চৌধুরী। স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শহরটার এ মাথা ও মাথা ঘুরছেন, ‘‘কোনও ভয় নেই, কিছু অসুবিধা হলেই ফোন করবি...।’’ মাঠে নামার আগে তাঁর গভীর ভোকাল টনিকে কাঠফাটা রোদ্দুরেও সাত সকালের তরতাজা লাগছে এক ঝাঁক কর্মীকে।

আর, শহরের প্রান্তে তখন অনুরোধে ঢেঁকি গিলে মোটরবাইক ছোটাচ্ছেন এক জন, দিলীপ ঘোষ। জনে জনে বলছেন, ‘‘২০টা আসনে প্রার্থী দিয়েছি কী এমনি এমনি, দেখুন না কী হয়!’’ শুক্রবার, শেষ বেলার প্রচারটা এমনই তিন-মুখো, টানা টান। আর, সেই সরগরম বাজারেই জোটের অন্য এক সঙ্গী আশ্চর্যরকম চুপচাপ, সিপিএম।

Advertisement

পালাবদলের প্রবল হাওয়ায় রাজ্য়ের অন্যত্র যখন একে একে মুছে গিয়েছে বামেরা, তখন মুর্শিদাবাদের এই প্রান্তিকভূমিতে তাদের পুরনো ভোট ব্যাঙ্ক অটুট রেখেছিল বামেরা। নিজের মান রাখতে গিয়ে জোট সঙ্গী কংগ্রেসও প্রার্থী দিয়ে বসেছিল বটে তবে ধোপে টেঁকেনি কেউই। প্রায় সাতাত্তর হাজার ভোট পেয়ে ডোমকল ধরে রেখেছিল তারাই।

বছর ঘুরতেই অবশ্য একে একে স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতি আর লাগোয়া চারটি পঞ্চায়েতের তিনটিই ডিগবাজি খেয়ে ভিড়েছিল তৃণমূলে। রাজনীতির মানচিত্রটা অন্তত আপাত ভাবে বদলে গিয়েছিল তার পরেই। জেলা বামফ্রন্টের এক নেতা বলছেন, ‘‘বদলে যাওয়া সেই রঙের সঙ্গে নির্বাচন মেলাতে যাবেন না।’’

বড় নেতাদের কাউকেই ডাকেনি তারা, শুধু দোরে-ঘুরে প্রচার সেরে শেষ দিনে তাই আড়মোড়া ভাঙছেন প্রাক্তন মন্ত্রী আনিসুর রহমান। বলছেন, ‘‘মনে রাখবেন, আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বোট চাই না। আমরা যা বলি তা করে দেখাই!’’ সেই আত্মবিশ্বাসটা শেষ বেলাতেও ধরে রেখেছেন আনিসুর।

সে জন্যই কী সবাই হাতড়াচ্ছেন সেই অমোঘ বাক্য— ‘দেখুন না কী হয়!’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement