প্রতীকী ছবি।
করোনার কারণে বিধানসভা ভোটে জেলায় কয়েকশো বুথ বাড়তে পারে। রবিবার কৃষ্ণনগরে নির্বাচন কমিশনের কর্তাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের বৈঠকে এমনটাই উঠে এসেছে। সেই মতো প্রস্তুতি নিতেও বলা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।
করোনার কারণে এ বার একাধিক নতুন পদক্ষেপ করা হবে বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে। জেলার কর্তাদের দাবি, কিছু দিন আগে হয়ে যাওয়া বিহার নির্বাচনের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে এই রাজ্যেও নির্বাচন পরিচালনার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে এমন বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হবে যা একেবারেই নতুন। সেই অর্থে এ বারের নির্বাচন প্রশাসনের কাছে কার্যত চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করছেন কর্তারা।
রবিবার রাতে জেলা প্রশাসনিক ভবনে জেলাশাসক ও নির্বাচন পরিালনার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন অধিকারিক আরিজ আফতাব। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই বৈঠকে মূলত বিহার ভোটের মডেলকে সামনে রেখেই আলোচনা করেছেন নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। সেই মতো প্রস্তুতিও নিতে বলা হয়েছে। বিহার মডেলে ভোট হলে কোনও বুথেই এক হাজারের বেশি ভোটার থাকবে না। স্বাভাবিক ভাবেই বাড়বে বুথের সংখ্যা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এমনটা হলে নদিয়া জেলায় বুথের সংখ্যা বাড়বে প্রায় ১ হাজার ৬৮২টি। বর্তমানে জেলায় বুথ রয়েছে ৪ হাজার ৫৮২টি। বুথের সংখ্যা যাতে অহেতুক না বাড়ে তার জন্য ভোটার তালিকা থেকে নাম ‘বিয়োজন’-এর কাজ আরও গুরুত্ব দিয়ে করতে বলা হয়েছে। মৃত ব্যক্তিদের নাম যাতে ভোটার তালিকায় না থাকে তার জন্য বুথ স্তরে অফিসারদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা করতে বলা হবে। মিলিয়ে দেখতে হবে পুরসভা বা পঞ্চায়েতের ‘ডেথ রেজিস্টার’ও। জেলায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর কারণে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন জমা পড়েছে প্রায় ২০ হাজারের মতো।
নির্বাচন কমিশনের কাছে নথিভূক্ত প্রতিবন্ধীদের পাশাপাশি ৮০ বছরের বেশি বয়সিদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা থাকছে। স্বাস্থ্য দফতরের তালিকাভূক্ত করোনা সংক্রমিত বা উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য থাকছে একই ব্যবস্থা। তবে কারও ক্ষেত্রেই পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। জেলার নির্বাচন আধিকারিক ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পাঁচ দিনের মধ্যে সরকারি কর্মীরা এই সকল ব্যক্তিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে ইচ্ছুক ভোটারদের কাছে ফর্ম পৌঁছে দেবেন। তাঁরা সেই ফর্ম পূরণ করে আবেদন করবেন নির্বাচন কমিশনের কাছে। সেই মতো পোস্টাল ব্যালট নিয়ে সংশ্লিষ্ট ভোটারের কাছে পৌঁছে যাবেন দু’জন ভোটকর্মী ও ভিডিওগ্রাফার। সঙ্গে থাকবে পুলিশ ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।
যদি কোনও করোনা সংক্রমিত বা উপসর্গযুক্ত ব্যক্তি বুথে গিয়ে ভোট দিতে চান, তাঁকে একেবারে শেষ লগ্নে গিয়ে ভোট দিতে হবে। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ঢোকার আগে প্রত্যেককে থার্মাল গান দিয়ে পরীক্ষা করে হবে। কারও শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকলে দ্বিতীয় বার পরীক্ষা করা হবে। দু’বারই বেশি হলে তাঁকে একটি ‘টোকেন’ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হবে এবং একেবারে শেষ লগ্নে বুথে এসে ভোট দিতে বলা হবে। ওই সময়ে এক জন ভোটকর্মী পিপিই পড়ে ভোটগ্রহণ করবেন। থাকবে পর্যাপ্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার ও মাস্ক। সমস্ত ভোটারকেই দস্তানা পরে ভোট দিতে হবে। সেই মতো পর্যাপ্ত দস্তানাও রাখা থাকবে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে। জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, “নির্বাচন কমিশনে যেমন নির্দেশ দেবে সেই মতোই পদক্ষেপ করা হবে।”