নিজস্ব চিত্র
প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় পিছিয়ে গিয়েছে পেঁয়াজ চাষের মরসুম। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে নওদা এলাকার পেঁয়াজ চাষিরা।
নওদার বিস্তীর্ণ এলাকার চাষিরা মূলত পেঁয়াজ চাষের উপরে নির্ভরশীল। ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা গৌরব সাহা বলছেন, ‘‘নওদা ব্লকে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার হেক্টর জমিতে রবি মরসুমে চাষিরা পেঁয়াজ চাষ করে থাকেন, যা রাজ্যে প্রথম। পাট কেটে নেওয়ার পরে মাস খানেক জমি ফেলে রাখা হয়। পরে সেই জমি তৈরি করে সেখানে লাগানো হয় পেঁয়াজ।’’
কিন্তু এ বছর প্রকৃতির খামখেয়ালির কারণে ব্যহত হয়েছে সেই চাষাবাদ। এ বছর অনাবৃষ্টি কারণে জলের অভাব দেখা দিয়েছিল। ফলে সময় মতো পাট কাটতে পারেননি অনেক চাষি। ফলে পেঁয়াজ লাগাতে দেরি হয়ে গিয়েছিল। এর মধ্যে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকার পেঁয়াজের বীজতলা। এখন নতুন করে বীজতলা তৈরি করতে আরও কয়েক দিন বাড়তি সময় লাগবে। ফলে প্রায় মাস খানেক পিছিয়ে গিয়েছে পেঁয়াজ চাষ। নওদার বাগাছাড়া গ্রামের চাষি ইলিয়াস মল্লিক বলছেন, ‘‘আমরা পাট কেটে নেওয়ার পরে সেই জমিতে পেঁয়াজের চাষ করি। আবার পেঁয়াজ ওঠার পর সেই জমিতে পাটের চাষ করি। এ বছর প্রকৃতির খামখেয়ালির জন্য সব আবাদেই মার খেলাম।’’
সাঁকোয়ার চাষি বাসিরুল শেখ যেমন প্রায় ১২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের বীজতলা তৈরি করেছিলেন। কিন্তু গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে চারা তৈরির আগেই সব বীজ নষ্ট হয়ে গিয়েছে তাঁর। তিনি বলছেন, ‘‘ এ বছর আগাম পেয়াজ চাষটা করতে পারলাম না।’’ মাটি শুকনোর পরে ফের বীজতলা তৈরি হবে। সে জন্য আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে চাষিদের। ফলে পেঁয়াজ চাষ মাস খানেক পিছিয়ে গেল। সব মিলিয়ে জোড়া ক্ষতির মুখে নওদার পেঁয়াজ চাষিরা। এ বছর নওদার চাষিরা পেঁয়াজ ওঠার মরসুমে ৪-৫টাকা কিলো দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিলেন। সেই পেঁয়াজই এখন বিকোচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কিলো দরে। তার উপরে এখন পেঁয়াজ চাষ পিছিয়ে গেলে আঁচ পড়বে মধ্যবিত্তের পকেটে।
জেলা উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) তাপস কুমার কুণ্ডু বলেন, ‘‘নওদার চাষিরা সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই আগাম পেঁয়াজ চাষের জন্য বীজতলা তৈরি করেন। অক্টোবর থেকে পুরোদমে বীজতলা তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায়। টানা বৃষ্টিতে ঝাউবোনা, ত্রিমোহিনীর মতো নিচু জায়গায় বীজতলার জন্য জমি তৈরি হতে আরও সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে। যার ফলে আগাম পেঁয়াজ চাষ এ বছর ব্যাহত হল।’’