প্রতীকী ছবি।
স্ত্রীকে মারধর করে, ভয় দেখিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
ওই ব্যক্তির স্ত্রীর পরিবারের অভিযোগ, বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে না পারায় প্রায়শই জুটত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। তার উপর স্ত্রী জন্ম দিয়েছে কন্যা সন্তানের, ফলে সেই অত্যাচার চরমে ওঠে বলে দাবি। অভিযোগ, বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে না পারায় স্ত্রীকে মারধর করে মাথার সমস্ত চুল কেটে ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্যাতিতা ওই তরুণী। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় বছর দু’য়েক আগে বিয়ে হয় বছর কুড়ির ওই তরুণীর। দুই পরিবারেরই বাড়ি মুর্শিদাবাদে।
ওই তরুণীর বাবা, মা দু’জনেই দৃষ্টিশক্তিহীন। ভিক্ষাবৃত্তি করেই চলে তাঁদের সংসার। চেয়েচিন্তে বছর দু’য়েক আগে মেয়ের বিয়ে দেন তাঁরা। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য স্ত্রীকে চাপ দিতেন স্বামী। ওই তরুণীর আরও অভিযোগ, অপর এক মহিলার সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে তাঁর স্বামীর। যা নিয়েও তাঁদের মধ্যে মাঝেমধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত।
মাস তিনেক আগে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ওই তরুণী। তার পর থেকে টাকা নিয়ে আসার চাপ আরও বাড়তে থাকে। টাকা এনে দিতে না পারায় দিন কয়েক আগে গত ১৮ জুন ওই তরুণীকে বেধড়ক মারধর করা হয়। হাত-পা বেঁধে, আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তার মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তরুণী ওই বিষয়টি পরিবারের লোকেদের জানান।
বৃহস্পতিবার সকালে ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরেছেন তাঁর মা। এর পর বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই তরুণী। ওই তরুণীর অভিযোগ, ‘‘অন্য মেয়ের সঙ্গে স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে আছে। তা ছাড়া মাঝে মধ্যে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিত। মেয়ে হওয়ার পর অত্যাচার বাড়তে থাকে। জোর করে হাত-পা বেঁধে, আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে মাথার সমস্ত চুল কেটে দিয়েছে। ওর শাস্তির ব্যবস্থা করুক পুলিশ।’’
ওই তরুণীর মা বলেন, ‘‘মেয়ে সন্তান হওয়ায় এক লক্ষ টাকা দিতে না পারায় মেয়ের উপর এ রকম অত্যাচার চালিয়েছে জামাই।’’ যদিও অভিযুক্তের সাফাই, মাথায় উকুন হওয়াতে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছে।’’ বিডিও বলেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত প্রধানকেও বলা হয়েছে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।