প্রতীকী ছবি
বিদ্যুৎ চুরির জন্য ‘হুকিং’ করা তারে জড়িয়ে মৃত্যু হল এক প্রৌঢ়ের। এর জন্য বিএসএফ-কে দায়ী করে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন গ্রামের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ।
পুলিশ জানায়, মৃতের নাম বলরাম বিশ্বাস (৫৫)। বাড়ি কৃষ্ণগঞ্জের বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা বিজয়পুর গ্রামে। রবিবার রাত ৮টা নাগাদ বর্ডার রোডের ধারে কলাবাগানের ভিতরে তাঁর মৃতদেহ তার জড়ানো অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। এর পরেই গ্রামবাসীদের অনেকে বর্ডার রোডে উঠে বিএসএফ জওয়ানদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। খবর পেয়ে কৃষ্ণগঞ্জ থানার পুলিশ গেলে তাদেরও ঘেরাও করা হয়। স্থানীয় সূত্রের দাবি, রাত প্রায় ২টো নাগাদ কৃষ্ণগঞ্জের বিডিও কামালউদ্দিন ঘটনাস্থলে গেলে তাঁকেও ভোর পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থলে যান কৃষ্ণনগর সদর মহকুমাশাসক মণীশ বর্মা। তিনি পুলিশকর্তাদের উপস্থিতিতে গ্রামবাসী ও বিএসএফের সঙ্গে বৈঠক করেন। দু’দিনের মধ্যে মৃতের পরিবারেকে সমস্ত রকম সরকারি ক্ষতিপূরণ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। মহকুমাশাসক বলেন, “গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিএসএফ-কেও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।” যদিও বিএসএফের ৫৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের সিও দেশরাজ সিংহের বক্তব্য, “ওই তারটা অনেক দিন ধরেই ওই ভাবে আছে। এর সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা ওই তার ব্যবহার করি না।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুরে বলরমা বিশ্বাস বর্ডার রোড পার হয়ে গ্রামের পাশে মাথাভাঙা নদীতে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। সন্ধের পরেও তিনি বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। রাত ৮টা নাগাদ কলাবাগানের ভিতরে তার জড়ানো অবস্থায় মৃতদেহটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। এর পরই শুরু হয় বিক্ষোভ। গ্রামবাসীদের একাংশ অভিযোগ করতে থাকেন, বিএসএফ এই তার দিয়ে হুকিং করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে আসছে দীর্ঘ দিন। তাঁরা বারবার তার সরিয়ে নেওয়ার কথা বললেও তারা কানে তোলে না। যদিও বিএসএফ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দেশরাজ সিংহের বক্তব্য, “হুকিং করার কোনও প্রশ্নই নেই। ওই ব্যক্তির সঙ্গে দা ছিল। তিনি সম্ভবত কলাগাছের পাতা কাটতে গিয়ে অসাবধানতাবশত তারে আঘাত করে ফেলেন। তাতেই বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়েছেন।” বিদ্যুৎবাহী তার এ ভাবে নাগালের মধ্যে পড়ে রইল কী করে? ‘হুকিং’ যদি সত্যি হয়ে থাকে, তা বন্ধ করা হয়নি কেন? রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার রিজিওন্যাল ম্যানেজার রমেশচন্দ্র মাধু শুধু বলেন, “বিস্তারিত খোঁজখবর না নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”