ধুয়ে দেওয়া হচ্ছে রক্ত। নাকাশিপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র
ছুটির দিন পাশের গ্রামে জলসার আয়োজন হয়েছে। দাদুর কাছে সেই জলসা দেখতে যাওয়ার আব্দার করেছিল দুই নাতনি। দাদুও রাজি হয়েছিলেন।
সেজেগুজে দাদুর মোটরবাইকে বসে মহানন্দে সেখানে যাচ্ছিল নাকাশিপাড়ার আরিজনগরের বছর বারোর রাহেজা ও বছর আটেকের রাজিয়া। কিন্তু পৌঁছতে পারেনি শেষ পর্যন্ত। ঘাতক ট্যাঙ্কার রাস্তাতেই ধাক্কা মারে মোটরবাইকে। তার চাকায় পিষে ঘটনাস্থলেই মারা যান দাদু সুজাউদ্দিন মল্লিক (৫৫) ও রাহেজা। মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে রাজিয়া। তাকে এলাকার মানুষ বেথুয়াডহরি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। কিন্তু অবস্থার অবনতি দেখে তাকে কৃষ্ণনগর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
রবিবার বিকেলে নাকাশিপাড়ার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর নাগাদি বাজারে এই দুর্ঘটনার পরেই এলাকা ফত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ দেহ উদ্ধারে গেলে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় মানুষ। রাস্তায় স্পিড ব্রেকারের দাবিতে ঘণ্টাখানেক রাস্তা অবরোধ করেন তাঁরা। অভিযোগ, তাঁরা পুলিশের উপর চড়াও হন। যদিও হামলার খবর পুলিশ অস্বীকার করেছে।
ঘটনাস্থলে কংগ্রেসের স্থানীয় ব্লক সভাপতি আনিসুর রহমান গেলে বিক্ষুব্ধ জনতা তাঁর গাড়িও ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ। আনিসুর বলেন, "যা ঘটেছে তা দুঃখের। আমি ওই গ্রামের বাসিন্দা ঘটনার কথা শুনে বেথুয়াডহরি থেকে ঘটনাস্থলে যেতেও আমার গাড়ির কাচ ভাঙা হয়। মানছি তাঁরা আবেগের বসে এটা করেছেন কিন্তু এই রকম করা উচিৎ নয়।"
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল্লা শেখ বলেন, " নাগাদি বাজার জনবহুল এলাকা। প্রায়ই এখানে দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রশাসনের টনক নড়ে না। নাগাদি বাজারে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ট্রাফিক পুলিশ লাগবে ও ট্রাফিক সিগন্যাল লাগাতে হবে।" আর এক বাসিন্দা আরিজুল শেখের কথায়, " রাস্তার অন্য দিকে নাগাদি হাইস্কুল। পড়ুয়ারা রাস্তা পারাপার হয়। গাড়ির গতি কমানোর জন্য রাস্তায় হাম্প চাই আমরা।’’