ভাঙা রাসের পরিক্রমায় আগল মানল না ভিড়। শান্তিপুরে। ছবি: প্রণব দেবনাথ
করোনাকালে দূরত্ববিধি মানার জন্য যাবতীয় উদ্যোগ করা হয়েছিল। তবে উৎসবের শেষ লগ্নে পৌছে সেই সচেতন আয়োজনের তার কাটল। বুধবার ভাঙা রাসের শেষ মুহূর্তের আনন্দটুকু নেওয়ার জন্য রাস্তায় নেমে পড়ল শান্তিপুরের জনতা। রাসের শোভাযাত্রায় নবদ্বীপ এবার যে সংযমের পরিচয় দিয়েছে, তা দেখাতে পারল না শান্তিপুরের ভাঙা রাস।
বুধবার গভীর রাতের বদলে যদিও এ বারের পরিক্রমা অবশ্য এই বছর শেষ হয়ে গিয়েছে রাত এগারোটাতেই। তবে তার মধ্যেও বেশ ভাল সংখ্যায় মানুষকে জমায়েত করতে দেখা যায় রাস্তায়। উদ্যোক্তারা বিধি মেনে এগোলেও যথেষ্ঠ সংখ্যক সাধারণ মানুষ রাস্তায় ভিড় জমিয়েছে।
এর আগে দুর্গাপুজো এবং কালীপুজোর সময়ে বিসর্জনের শোভাযাত্রা ঘিরে শান্তিপুরের রাজপথে মানুষের ঢল নেমেছিল। আর সেই জনস্রোতেই ভেসে গিয়েছিল করোনা সময়ে পারস্পরিক দূরত্ব নিয়ন্ত্রণের বিধি। তা দেখেই রাসে আগাম ভিড় নিয়ন্ত্রণের চিন্তাভাবনা শুরু করেছিল প্রশাসন।
কার্যক্ষেত্রে অবশ্য বুধবার রাত থেকেই ভিড় হতে দেখা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার শান্তিপুরের রাসের তৃতীয় দিনে নগর পরিক্রমায় পথে বের হতে দেখা যায় বেশ কিছু প্রতিমা এবং বিগ্রহ। যদিও সব বিগ্রহ বাড়ি তাদের বিগ্রহ নিয়ে বের হয়নি। তবে বেরিয়েছে কেউ কেউ। বারোয়ারিগুলির মধ্যেও অনেকেই তাদের প্রতিমা নিয়ে বের হয়।
এ দিন বিগ্রহের ক্ষেত্রে শোভাযাত্রার নির্দিষ্ট পথ ঘুরে তারা আবার রাসমঞ্চে ফিরে গিয়েছে। বারোয়ারিগুলি শোভাযাত্রার পথ ধরে গিয়ে তাদের প্রতিমা বিসর্জন দেয়।
এই বছর শান্তিপুরের আলোকসজ্জা, ট্যাবলো, মডেল ইত্যাদি নিয়ে শোভাযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। তা মেনেই শোভাযাত্রার পথে এগিয়েছেন উদ্যোক্তারা। বুধবার বিকেলের দিকেও রাস্তায় সে ভাবে মানুষজন ছিল না। তবে রাত যত বেড়েছে, সময় যত এগিয়েছে, শোভায়াত্রায় জনসমাগমও বেড়েছে। গত বছরে শোভাযাত্রা শেষ হতে পরের দিন সকাল হয়ে গিয়েছিল। তবে এই বছরে অধিকাংশ পুজো উদ্যোক্তা শোভাযাত্রায় বেরোয়নি, আবার বড় আকারে শোভাযাত্রাও হয়নি। ফলে, রাসের পরিক্রমা শেষ হয়ে গিয়েছে মধ্যরাতের আগেই।
প্রতি বছর ভাঙা রাসে ব্যাপক মানুষের ঢল নামে শান্তিপুর শহরে। করোনা পরিস্থিতিতে এই বছর উদ্যোক্তাদের তরফে যাবতীয় ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। শহরের মধ্যে একাধিক ড্রপগেট এবং প্রচুর পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু রাত গড়াতেই মানুষের উপস্থিতি দেখা যায় বিভিন্ন রাস্তায়।
শান্তিপুরের পুর প্রশাসক অজয় দে বলেন, “এবা রের পরিক্রমা শেষ হয়ে যায় অনেক আগেই। উদ্যোক্তারা বিধি মেনেছেন। মানার আগ্রহ ছিল সকলেরই।”
রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার ভিএসআর অনন্তনাগ বলেন, “সকলেই বিধি মেনেছেন। সে ভাবে জমায়েত হয়নি কোথাও।”