—ফাইল চিত্র
জিয়াগঞ্জের হত্যাকাণ্ডের জেরে আগেই থমকে গিয়েছিল বিজয়া সম্মিলনীর বেশ কিছু অনুষ্ঠান। এ বার প্রভাব পড়ল কালীপুজোতেও। কোনও পুজো কমিটি এ বছর পুজো বন্ধ রাখছে, কোনও পুজো কমিটি আবার অনাড়ম্বর ভাবে পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
৮ অক্টোবর, দশমীর সকালে জিয়াগঞ্জের লেবুবাগান এলাকায় নিজের বাড়িতে খুন হন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিউটি এবং তাঁদের ছ’বছরের ছেলে অঙ্গন। ঘটনার সাত দিন পরে পুলিশ গ্রেফতার করেছে মূল অভিযুক্ত উৎপল বেহেরাকে। আদালতের নির্দেশ উৎপল বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
একই পরিবারের তিন জন খুনের ঘটনার প্রভাব পড়েছে জিয়াগঞ্জের নাগরিকদের মনে। তার জেরে বিভিন্ন পুজো কমিটি থেকে বিভিন্ন ক্লাব ও সংস্থা বিজয়া সম্মিলনী বাতিল করেছেন। কোথাও আবার বিজয়া সম্মিলনী হয়েছে এক প্রকার অনাড়ম্বরের সঙ্গে।
এ বার তার প্রভাব পড়ল লেবুবাগান এলাকার কালীপুজোয়। আগামী ২৭ অক্টোবর কালীপুজো। থিমের পুজো না করলেও প্রতি বছর চোখ-ধাঁধানো পুজো করে লেবুবাগানের তরুণ সঙ্ঘ ক্লাব। এ বছর ওই পুজো কমিটি অবশ্য নমো নমো করে পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পুজো কমিটির কর্তা বিজয় হালদার বলছেন, ‘‘এত বড় একটা ঘটনার পরে ধুমধাম করে পুজো করার মতো মানসিকতা নেই। এ বছর বাঁশ বেঁধে ত্রিপল টাঙিয়ে কোনও রকমে পুজো হবে। মণ্ডপ করছি না।’’
প্রতি বছর ওই কালীপুজোয় রঙিন আলোয় সেজে ওঠে রাস্তা। এ বছর তা বন্ধ। বাজবে না মাইকও। পুজো উদ্যোক্তারা প্রতি বছর মন্দিরে সাবেক প্রতিমায় কালীপুজো করেন। পরের দিন তাঁরা পাত পেড়ে লোকজনকে খাওয়ান। এ বছর বন্ধ থাকছে তা-ও।
ওই হত্যাকাণ্ডের জেরে এ বছর পুজো বাতিল করেছেন লেবুবাগানের আনন্দময়ী ক্লাব কর্তৃপক্ষ। ওই ক্লাব সম্পাদক তথা জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জের প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান মনোজ সরকার বলছেন, ‘‘দুর্গাপুজোর পর থেকেই কালীপুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। কিন্তু ওই খুনের ঘটনায় সব এলোমেলো হয়ে গেল। পুজোর আনন্দে মেতে ওঠার মতো মনের অবস্থা নেই কারও। পাড়ার সকলেই মনমরা হয়ে আছেন। কাজেই কালীপুজো আয়োজনে উৎসাহ নেই কারও।’’