— প্রতীকী চিত্র।
চুরি করে পালানোর সময়েই স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে গিয়েছিলেন দুই সাগরেদ। তবে মূল পাণ্ডা কোনও ক্রমে সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। ছেড়েছিলেন রাজ্যও। পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিতে সিমকার্ডও খুলে ফেলেছিলেন ফোন থেকে। এত কিছুর পরেও হল না শেষ রক্ষা! অবশেষে শনিবার রাতে মুর্শিদাবাদের সুতি থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন প্রাচীন মূর্তি চুরি চক্রের ওই পাণ্ডা। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত যুবকের নাম রণবীর ঠাকুর (২৭)। তাঁর বাড়ি ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ জেলায়। ঘটনাচক্রে, ধৃতের বাবা ঝাড়খন্ড পুলিশে কনস্টেবল পদে কর্মরত।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সাহেবগঞ্জ জেলার জিরিয়াবাড়ি থানা এলাকায় প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো একটি হনুমান মন্দির রয়েছে। তিন দিন আগে ওই মন্দির থেকে চুরি যায় শতাধিক বছরের প্রাচীন অষ্টধাতুর হনুমান বিগ্রহ। যার মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে কয়েক কোটি টাকা। বিগ্রহ চুরির ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে রাস্তা এবং রেল অবরোধ করেন। এমনকি থানা পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখা হয়েছিল। অভিযোগ, মন্দিরে রাতের বেলায় চুরি করা সম্ভব নয় বুঝতে পেরে রণবীর ও তাঁর দুই সাগরেদ ভোরে যখন পুরোহিত মন্দির খুলতে আসেন, সেই সময় তাঁকে মারধর করে মন্দিরে রাখা অষ্টধাতুর বিগ্রহটি চুরি করে নিয়ে পালান। স্থানীয় বাসিন্দারা দু’জনকে ধরে ফেললেও রণবীর কোনও রকমে ঝাড়খণ্ড থেকে পালিয়ে মুশিদাবাদ জেলার আহিরণে চলে আসেন।
সুতি থানার এক আধিকারিক জানান, আহিরণ এলাকায় জঙ্গলের কাছ থেকে রণবীরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেখানেই প্রাচীন বিগ্রহটি লুকনো রয়েছে বলে অনুমান ছিল। কিন্তু রাতভর সেখানে তল্লাশি চালিয়েও বিগ্রহটি উদ্ধার হয়নি। রণবীরকে ইতিমধ্যেই ঝাড়খণ্ড পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় বলেন, ‘‘ধৃত যুবক শনিবার রাতে আহিরণ ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করছিল। সেই সময় সুতি থানার পুলিশের একটি টহলদারি দল তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। এরপর তার সঙ্গে থাকা দু’টি মোবাইল ফোন অন করতেই ঝাড়খণ্ডের পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং বিগ্রহ চুরির গোটা বিষয়টি আমরা জানতে পারি। ধৃত ওই যুবককে ইতিমধ্যে ঝাড়খণ্ড পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’’