ঝাড়গ্রামে হাতির হানায় ভেঙে পড়া বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
হাতির হানায় এক মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় আতঙ্ক ছড়াল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গোয়ালতোড় থানার মাকলি অঞ্চলের চেচুরিয়া গ্রামে। অন্য দিকে, ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া রেঞ্জের শিমুলডাঙা গ্রামে হাতির দলের হানায় ভেঙেছে বেশ কয়েকটি বাড়ি। বুধবার এ নিয়ে দুই জেলার দুই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
গোয়ালতোড় এলাকায় মৃত মহিলার নাম শাশ্বতী পাত্র শতপথী (৪৫)। স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার সকালে এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল একটি দলছুট হাতি। সেই হাতিটির পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ওই মহিলার। এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছে বন দফতর। তারা জানিয়েছে, মৃতের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫ লক্ষ টাকা তুলে দেওয়া হবে। পাশাপাশি ওই পরিবারের এক সদস্যকে চাকরি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মোনালিসাই বনবিভাগের আধিকারিক পিন্টু কুণ্ডু।
অন্য দিকে, বুধবার ভোররাতে ঝাড়গ্রাম বনবিভাগের মানিকপাড়া রেঞ্জের শিমুলডাঙা গ্রামে হাতির হানায় ১০টি মাটির বাড়ি ভেঙেচুরে গিয়েছে। আংশিক ভাবে ভেঙেছে আরও ১১টি মাটির বাড়ি। বাড়িঘর হারিয়ে অসহায় গ্রামের লোধা-শবর পরিবার গুলি। স্থানীয় সূত্রে খবর, ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের লোধাশুলি রেঞ্জে বেশ কয়েক দিন ধরে ৩৫ থেকে ৪০টি হাতির একটি দল রয়েছে। রাত হলেই খাবারের সন্ধানে গ্রামে হানা দিচ্ছে তারা। মঙ্গলবার রাতে লোধাশুলি রেঞ্জ থেকে মানিকপাড়া রেঞ্জে ঢুকে পড়ে এক দল হাতি। গভীর রাতে কিসমত, ঠাকুরথান গ্রামে হানা দেওয়ার পর ওই হাতির দলটি ঢুকে পড়ে শিমুলডাঙায়। গ্রামের বাসিন্দা টুকুরাম মাহাতো বলেন, ‘‘রাত সাড়ে ১২টার পর হঠাৎ করে গ্রামের কাছে হাতির দল ঢুকে পড়ে। বেশির ভাগ হাতি গ্রামে না ঢুকে গ্রামের পাশ দিয়ে পেরিয়ে যায়। কিন্তু এখানে চার-পাঁচটি হাতি গ্রামে ঢুকে একের পর এক মাটির বাড়ি ভাঙা শুরু করে। হাতিগুলোকে দেখে মনে হচ্ছিল, ওরা যেন রাগ মেটাচ্ছে বাড়ি ভেঙে। গ্রামের গোপাল মল্লিক, মধুসূদন মল্লিক, চঞ্চলা মল্লিক, ভবেশ মল্লিক, ঝন্টু মল্লিক, নির্মল নায়েক, ধূবেশ মাহাতো-সহ ১০ জনের বাড়ি ভেঙে দিয়েছে ওরা।’’ মধুসূদন মল্লিকের কথায়, ‘‘বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে ছিলাম। কিছুই বুঝতে পারিনি প্রথমে। হঠাৎ হাতিগুলো বাড়ি ভাঙতে শুরু করল। আমরা কোনও ক্রমে বাড়ি থেকে পালিয়ে প্রাণে বেঁচেছি।’’
বাঁশতলা এলাকায় হুলা পার্টির দুই সদস্যের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এক সপ্তাহের মধ্যে। তাই হাতি তাড়ানোর কাজে যাচ্ছেন না হুলা পার্টি সদস্যরা। তাঁরা একাধিক দাবিতে ঝাড়গ্রামের ডিএফও-র কাছে ডেপুটেশন জমা দিয়েছেন। রাজ্যের বনপ্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেন, ‘‘বিষয়টি আমি সকালেই জানতে জেনেছি। ওই এলাকার মানুষজনের দুপুরের খাবারের বন্দোবস্ত করে দেওয়া হয়েছে। ওঁদের পাশি আছি।’’