— প্রতীকী চিত্র।
তৃণমূল নেতা খুনে পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনাল মুর্শিদাবাদের আদালত। ২০২১ সালে চায়ের দোকানের সামনে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল তৃণমূল নেতা হাসিবুর রহমানকে। পাঁচ জনের বিরুদ্ধে বাবাকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মৃত তৃণমূল নেতার ছেলে। দীর্ঘ আড়াই বছর বিচার প্রক্রিয়া চলার পর শুক্রবার অভিযুক্ত পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত। স্বামীর খুনের বিচার পেয়ে বিচার ব্যবস্থাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মৃত তৃণমূল নেতার পঞ্চায়েত সদস্যা স্ত্রী।
কান্দি আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর ব্যবসার কাজ সেরে মুর্শিদাবাদের সালার থানার বাবলা গ্রাম থেকে নিজের বাড়িতে ফেরার পথে বহড়া গ্রামে রাস্তার উপর একটি চায়ের দোকানের সামনে তৃণমূল নেতা হাসিবুরের বাইক থামিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করে পাঁচ দুষ্কৃতী। স্থানীয়েরা ছুটে এলে দুষ্কৃতীরা সেখান থেকে চম্পট দেয়। তড়িঘড়ি উদ্ধার করে হাসিবুরকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃত তৃণমূল নেতার ছেলে ফিরোজ আলির অভিযোগ ছিল, আনারুল শেখ, বশির শেখ, জয়নাল শেখ, সুরাদ শেখ, ভুলু শেখ— রাজনৈতিক শত্রুতার জেরে এই পাঁচ জনই তাঁর বাবাকে খুন করেন। সালার থানায় ওই পাঁচ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন ফিরোজ। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। গ্রেফতার হন পাঁচ অভিযুক্ত। বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান দুই অভিযুক্ত। বাকি তিন জনকে হেফাজতে রেখে শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে মোট ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর শুক্রবার কান্দি আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক অরিন্দম দাস অভিযুক্ত পাঁচ জনকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। অনাদায়ে আরও দু’মাসের অতিরিক্ত কারদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
মৃত তৃণমূল নেতার পঞ্চায়েত সদস্যা স্ত্রী রূপালি শেখ বলেন, ‘‘বিরোধী রাজনৈতিক দল করার জন্য স্থানীয় দুষ্কৃতীরা স্বামীকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করেছিল। আদালত আজ (শুক্রবার) ন্যায্য বিচার দিয়েছে। আমরা বিচারব্যবস্থার উপরে আস্থাশীল।’’ সরকারি আইনজীবী সুনীল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুলিশের তদন্তের জেরে ও আমাদের প্রচেষ্টায় আক্রান্ত পরিবার যে ন্যায্য বিচার পেয়েছে, তাতে আমরা খুশি। আশা করি, ভবিষ্যতে অপরাধীরা এই রায়কে দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখবে।’’