বিজেপির সভায় দিলীপ ঘোষ। পাঁচথুপিতে। নিজস্ব চিত্র
সভা শুরু হওয়ার আগে থেকেই শরতের নীল আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে যায়। মেঘ দেখে বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “ভয় নেই........., বিজেপি যেখানে সভা করে সেখানে ভগবানও সঙ্গ দেয়। ফলে বৃষ্টি হবে না।” দিলীপের কথা শেষ হতে না হতেই মোটা মোটা ফোঁটা নিয়ে মুষল ধারে বৃষ্টি শুরু হয়। সভাস্থলে থাকা বিজেপির কর্মী সমর্থকরা সভাস্থল ছেড়ে পালিয়ে বৃষ্টিতে ভেজা থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করেন।
সোমবার বড়ঞা থানার পাঁচথুপি বাসস্ট্যান্ডে বিজেপির সভায় এমন ঘটনায় ঘটে।
৯ সেপ্টম্বর ‘চোর ধরো জেল ভরো’ কর্মসূচিকে সামনে রেখে বিজেপির নবান্ন অভিযানের জন্যই এই সভা।ওই দিন সভাস্থল বহরমপুর সংসদীয় এলাকার মধ্যে পড়ে। যার সংসদ কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী। কিন্তু ওই সভা থেকে অধীরের বিরুদ্ধে একটি শব্দ খরচ করেননি দিলীপ।
বরং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে দিলীপ বলেন, “রাজ্য জুড়ে বালি, কয়লা, গরু ও পাথরের সঙ্গে চাকরি দেওয়ার কেলেঙ্কারিতে যে টাকা তোলা হয়েছে তার একটা অংশ কালীঘাটে পৌঁছয়।” রাজ্যবাসীকে পানীয় জল, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নয়নের লোভ দেখিয়ে ক্ষমতায় এসেছে রাজ্য সরকার। বেকারদের শিক্ষকতা, পুলিশের চাকরি দেওয়ার কথা বলে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল, কিন্তু রাজ্যের উন্নয়ন হয়নি।’’
দিলীপ বলেন, “প্রায় সাড়ে পাঁচশো দিন ধরে শিক্ষকতার চাকরির যোগ্য বেকার যুবক যুবতীরা ধরনা দিচ্ছেন, ওই ধরনার ঘটনায় প্রমাণ করে রাজ্য সরকার মিথ্যা কথা বলে ক্ষমতায় এসেছে। ফলে ওই সরকারের আর ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।”
অনুব্রত মণ্ডলকে কটাক্ষ করে দিলীপ বলেন, “বীরভূমে কথায় কথায় গাঁজা কেস দিয়ে জেলে ভরেছে তৃণমূলের অনুব্রত, সেই এখন গরু পাচারে জেলে।”
দিলীপ বলেন, “ভগবানগোলার তৃণমূলের বিধায়ক ইদ্রিশ আলির বাড়ি ঘেরাও করেছিল তাঁদের দলের কর্মীরা। টাকা নিয়ে দলের পদ বিক্রি করছিল। একই সঙ্গে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক ৩০লক্ষ টাকা দিয়ে ব্লক সভাপতি করছে সেটাও প্রকাশ্যে এসেছে।”
ভগবানগোলা বিধায়ক ইদ্রিস আলি বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে একটা ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছিল। দিলীপবাবুদের হাতে ইডি, সিবিআই সবই আছে। আমার বিরুদ্ধে তদন্ত করে দেখা হোক তা হলেই বোঝা যাবে উনি কতটা সত্য বলছেন।’’
দিলীপ ঘোষ রঘুনাথগঞ্জে এ দিন সন্ধ্যায় বলেন, ‘‘গরু পাচারের তদন্তে সিআইডি যা করেছে, আগে করলে সিবিআইকে আসতে হত না।আসলে তদন্ত ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে সিআইডি।’’ সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আজ শিক্ষক দিবস। যারা পরীক্ষায় পাশ করেছে, তারা রাস্তায় বসে রয়েছে। যাদের বাবার টাকা রয়েছে, তারা পড়ানোর চাকরি পেয়েছে।’’
কান্দির তৃণমূলের বিধায়ক অপূর্ব সরকার বলেন, “বিজেপির ক্ষমতা থাকলে আমাদের নেত্রীকে গ্রেফতার করে দেখাক। আমরাও দিলীপকে চ্যালেঞ্জ করছি।”