প্রতীকী ছবি।
মণ্ডল সভাপতি বদলে যেতেই নবদ্বীপে প্রকাশ্যে চলে এল বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল। এই রদবদলের পিছনে হাত আছে অভিযোগ তুলে দলের নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি গৌতম পালের বিরুদ্ধে ‘লবিবাজি’র অভিযোগ তুলে তিনি বিধানসভা ভোটে নবদ্বীপে প্রার্থী হলে ভোট বয়কট করার মতো মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন বিজেপি যুবমোর্চার নবদ্বীপ উত্তর মণ্ডলের সভাপতি তন্ময় কুণ্ডু। যা নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন নবদ্বীপের বিজেপি নেতৃত্ব।
সোমবার সন্ধ্যায় বিজেপির নবদ্বীপ শহর উত্তর মণ্ডলের বর্তমান সভাপতি শঙ্কর গোস্বামীকে সরিয়ে সভাপতি করা হয় আনন্দ দাসকে। সে দিনই নবদ্বীপের পাঁচটি মণ্ডলের সভাপতি বদল করা হয়। নবদ্বীপ শহর ছাড়াও জেড পি ২৪ মণ্ডলের পিন্টু ঘোষকে সরিয়ে ভানু ঘোষ এবং জেড পি ২৩এ মণ্ডলের সভাপতি গোবিন্দ রায়কে সরিয়ে উত্তম মজুমদারকে সভাপতি করা হয়। নবদ্বীপের ২৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টি করে ওয়ার্ড নিয়ে একটি করে মণ্ডল। শহরের ১ – ১১ নম্বর ও ২১ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে নবদ্বীপের উত্তর মণ্ডলের সভাপতি হলেন আনন্দ দাস। তিনি বলেন, “আমিও সোমবার সন্ধ্যায় জানতে পারি, রাজ্যের অনুমোদনের ভিত্তিতে নদিয়া উত্তর সাংগথনিক জেলার সভাপতি আশুতোষ পাল আমাকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি বর্তমানে নদিয়া উত্তর জেলা এসসি মোর্চার সম্পাদক হিসাবে কাজ করছি।”
কিন্তু আনন্দের মণ্ডল সভাপতি হওয়ার খবর জানার পরেই ক্ষোভ উগরে দেন দলের নেতাকর্মীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, সকলকে অন্ধকারে রেখে মণ্ডল সভাপতি বদলে আগামী বিধানসভা ভোটে নবদ্বীপ আসনে নিজের টিকিট পাওয়ার রাস্তা পরিষ্কার করার চেষ্টা করছেন দলের নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি গৌতম পাল। নাম প্রকাশ্যে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সদ্যনিযুক্ত মণ্ডল সভাপতির বিরুদ্ধে দলবিরোধী কাজ, মহিলা কর্মীদের অপমান করা, বিজেপির শ্রমিক আন্দোলনে বাধা দেওয়ার মতো একগুচ্ছ অভিযোগ করেন যুবমোর্চার তন্ময় কুণ্ডু। তাঁর দাবি, “গত রবিবার সাংসদ এসে বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি বৈঠক করে গিয়েছেন। এর পর হঠাৎ কাউকে কিছু না জানিয়ে এমন রদবদল দলের অভ্যন্তরীণ ক্ষতি করবে। নাম করেই গৌতম পালের কথা বলছি। আমরা উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছি। আশা করি দলীয় নেতৃত্ব দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।” এই প্রসঙ্গে আনন্দ বলেন, “ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ সকলেরই আছে। আমি যদি ওঁর অপছন্দকে ভালবাসা এবং কাজ দিয়ে পছন্দে বদলে দিতে পারি, তবেই আমার জয়।”
অন্য দিকে গৌতম পালের দাবি, “হয়তো ব্যক্তিগত আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ না হওয়ায় ক্ষোভে এমন কাজ করেছে। তবে এমন আবেগ খারাপ। আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মণ্ডল সভাপতি তিন বছরের বেশি থাকা যায় না। সকলেরই তিন বছর শেষের মুখে। ব্যক্তিগত প্রভাব কাজ করে না। জেলার কোর কমিটির সঙ্গে রাজ্য কমিটির বৈঠকে রাজ্যের সভাপতির অনুমোদনক্রমে মণ্ডল সভাপতি নিয়োগ হয়। তন্ময় কুণ্ডুর অভিযোগ সর্বৈব ভুল। মনে রাখতে হবে, এই দলে আনুগত্যটাই শেষ কথা।”