বিক্ষোভে শামিল এনআরএসের জুনিয়র চিকিৎসকরা।
এক দিকে চিকিৎসক-সত্ত্বা, অন্য দিকে রাজনৈতিক আনুগত্য।
চিকিৎসক নিগ্রহের প্রতিবাদে ডাক্তারদের আন্দোলন নিয়ে যখন গোটা রাজ্য উত্তাল তখন নদিয়ায় চিকিৎসকদের সর্বভারতীয় সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’ বা আইএমএ-র আঞ্চলিক শাখাগুলি কিন্তু রাজনীতির উর্ধ্বে পেশাগত ঐক্যকে স্থান দিলেন।
এমনিতে ‘অরাজনৈতিক’ বলে চিহ্নিত আইএমএ আদতে এখন মূলত তৃণমূল প্রভাবিত। তার উপর এ রাজ্যে শাসক দল চিকিৎসকদের এই কর্মবিরতি ও আন্দোলনকে সমর্থন করছে না। উল্টে আন্দোলনকারীরা খোদ মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনাও করেছেন। এই রকম পরিস্থিতিতে আইএমএ-র কৃষ্ণনগর ও কল্যাণী শাখা কিন্তু তাদের রাজনৈতিক প্রবণতা দূরে সরিয়ে পেশাগত সমস্যার পাশেই দাঁড়িয়েছে। হাসপাতালের জরুরি পরিষেবা চালু রেখে কর্মবিরতি পালনকে সমর্থন জানিয়েছেন আইএমএর নদিয়া জেলার কর্তারা। এদিন তাঁরা বলেন, “চিকিৎসকদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিযেছে। আন্দোলন ছাড়া উপায় নেই।” কিন্তু শাসক দল যদি রেগে যায়?
আইএমএর এক কর্তা বলছেন, “চিকিৎসকরা মরতে বসেছে। এখন আর এ সব নিয়ে ভাবা উচিৎ নয়।” কল্যাণীতে বেশ কিছু চিকিৎসক তাঁদের নিজস্ব চেম্বার বুধবার খোলা রাখলেও কৃষ্ণনগরের চিকিৎসতরা কিন্তু তা করেননি। দু’-এক জন ছাড়া সকলেই এ দিন চেম্বার বন্ধ রেখেছিলেন। এ দিন বিকেলে কল্যাণীতে অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা প্রতিবাদ মিছিল করেন। কৃষ্ণনগরের পোস্টঅফিস মোড়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে বেশ কিছু চিকিৎসক এ দিন প্রতিবাদ সভা করেন।
আইএমএর কৃষ্ণনগর শাখার সভাপতি রমেন্দ্রনাথ সরকার বলছেন, “এক জন চিকিৎসক আজ জীবন মৃত্যুর মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছেন। কে কোথায় রাগ করল না করল তা নিয়ে ভাবার সময় এখন নয়।” আর কল্যাণী শাখার সভাপতি শান্তিরঞ্জন মন্ডল বলছেন, “এটা ঠিক যে, আইএমএ তৃণমূল প্রভাবিত। কিন্তু আমাদের রাজ্য শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তনু সেনও এই ঘটনার নিন্দা করেছেন। এর মধ্যে রাজনীতি খোঁজা ঠিক হবে না।”
শান্তনু সেনের কথায়, ‘‘চিকিৎসকদের কাজের সুস্থ পরিবেশ না দিলে তাঁরা সমাজকে সুস্থ রাখতে পারবেন না। চিকিৎসক নিগ্রহের প্রতিবাদ করছি কিন্তু সাধারণ মানুষকে বিপদে ফেলেও কোনও সমস্যার সমাধান হতে পারে না। সমাজের শুভবুদ্ধির উদয় হতে হবে।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।