—প্রতীকী চিত্র।
অনেক টাকার ঋণ। পাওনাদারেরা মাঝেমাঝেই হানা দিতেন স্কুলে। সে জন্য স্কুলে যাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু পাওনাগণ্ডা বুঝে নিতে প্রধানশিক্ষকের বাড়িতেও যাতায়াত শুরু হয়। তার মধ্যে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মঘাতী হলেন ওই প্রধানশিক্ষক। পরিবারের দাবি, অতিরিক্ত দেনার চাপ এবং মানসিক অবসাদের জেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। শনিবার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শমসেরগঞ্জের গাজিনগর মুষ্টিকমিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক ছিলেন চিন্ময় প্রধান। ৪৫ বছরের চিন্ময়ের সংসার ছিল স্ত্রী এবং দুই ছেলেকে নিয়ে। সম্প্রতি স্কুলে তিনি অনিয়মিত হাজিরা দিচ্ছিলেন। ধুলিয়ান চক্রের স্কুল পরিদর্শক হোসেনেরা খাতুন বলেন, ‘‘উনি বেশ কিছু দিন ধরে স্কুলে আসছিলেন না। অনুপস্থিতির কারণও জানাননি। হঠাৎ ওঁর মৃত্যুসংবাদ পেলাম। শুনেছি, মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন উনি। দুঃখজনক ঘটনা। ওঁর পরিবারকে সমবেদনা জানাচ্ছি।’’
শনিবার সকাল থেকে চিন্ময়কে দেখতে পাননি পরিবারের সদস্যেরা। পরে নির্মীয়মাণ বাড়ির দোতলায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে তাঁকে ঝুলতে দেখেন পরিবারের সদস্যেরা। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
২০০৫ সালে ধুলিয়ান চক্রের গাজিনগর মুষ্টিকমিটি স্কুলের প্রধানশিক্ষক পদে যোগ দেন চিন্ময়। বহরমপুর থেকেই স্কুলে যাতায়াত করতেন। পরিবার সূত্রে খবর, বাজারে অনেক টাকার ঋণ ছিল প্রধানশিক্ষকের। পাওনাদারেরা প্রায়শই স্কুলে গিয়ে দেনা শোধ করার জন্য তাগাদা দিতেন। সেই মানসিক চাপ থেকেই চিন্ময় আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি। জানা যাচ্ছে, স্কুলে গরমের ছুটি পড়ার আগে থেকে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন প্রধানশিক্ষক। মৃত প্রধানশিক্ষকের ছেলে সুজিত প্রধান বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম, বাবা বাজারে গিয়েছে। খোঁজ করেও পাচ্ছিলাম না। পরে দোতলার ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে। বাবা কেন এমনটা করল, জানি না। শুনেছি, বাবার বেশ কিছু টাকা ঋণ ছিল। বাবা কোনও সমস্যার কথা আমাদের বলেনি।’’