গিরিয়া, সেকেন্দ্রায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পরে খুশি তৃণমূল শিবিরে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায় Stock Photographer
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জঙ্গিপুরে গিরিয়া ও সেকেন্দ্রা গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল নিল শাসক দল। সবুজ আবিরে মাতলেন দলের কর্মীরা। তবে গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করলেও বিরোধীরা প্রার্থী দেওয়ায় ভোট হবে পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদে। বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া পদ্মা পাড়ের দুই পঞ্চায়েত গিরিয়ায় ১৪টি আসনে শুধু তৃণমূলই মনোনয়ন জমা দিয়েছে, সেকেন্দ্রায় ২৫টি আসনের মধ্যে ১৭টি পেয়ে গিয়েছে তৃণমূল।
অবশ্য এই ট্রাডিশন এই প্রথম নয়। বিনা ভোটে দুই পঞ্চায়েতই গত সাড়ে চার দশক ধরে কখনও শাসন করেছে সিপিএম, কখনও কংগ্রেস। এ বার তা তৃণমূলের। শাসক কখনও বোমা, গুলিতে নিয়ন্ত্রিণ করেছে, কখনও অন্য ভাবে।
এক সময়ে হাড় হিম করা সন্ত্রাসে বুক কাঁপত পুলিশেরও। প্রতি ভোটের আগেই সংঘর্ষ ও বোমাবাজি তটস্থ রাখত গ্রামকে। বাম ও কংগ্রেস জমানায় বোমা, গুলির লড়াই চলত। কখনও গ্রামের কোনও বাড়ির মধ্যে উঠোন থেকে, কখনও আম বা বাঁশ বাগানের মাটি খুঁড়ে শয়ে শয়ে তাজা বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। শতাধিক মামলা রুজু হয়েছে। জেল খেটেছেন কয়েকশো মানুষ।
গ্রাম ঢুকতেই এক কালী মন্দির। মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে এক প্রবীণা বলছেন, “ভোট কখনও দিয়েছি, কখনওবা বুথ থেকেই ফিরে এসেছি। আবার কখনও ভোটই দিতে হয়নি।ভোট এলেই বোমা নিয়ে ছুটোছুটি। সে এক আতঙ্কের দিন।”
সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সোমনাথ সিংহরায় বলেন, “এখনও দুই পঞ্চায়েতে ভাল সমর্থক রয়েছে আমাদের। তাঁরা বিধানসভা, লোকসভায় ভোট দেন। কিন্তু পঞ্চায়েত ভয়ে এড়িয়ে চলেন।” কংগ্রেসের জেলা সম্পাদক সেকেন্দ্রার বাসিন্দা প্রকাশ সাহা বলছেন, ‘‘আমাদের অনেক সমর্থক থাকলেও রুখে দাঁড়াবার সাহস নেই। তাঁদের বিপদে ফেলতে চাইনি।”
এখন এক কলেজ পড়ুয়া বলছেন, “ভোট নেই, মাইক নেই, দেওয়াল লিখন নেই। নেই পুলিশের আনাগোনাও। তাই শান্তিতে আছি আমরা।”
প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামানের বিধানসভা কেন্দ্রে পড়ে গিরিয়া ও সেকেন্দ্রা। মন্ত্রী বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের ডাকে সাড়া দিয়েই ওখানকার মানুষ তৃণমূলকে সমর্থন জানিয়েছেন। বিরোধীরা সেই কারণেই প্রার্থী খুঁজে পায়নি দুই এলাকায়। এই জয় কর্মীদের অনুপ্রাণিত করবে। আমার লক্ষ্য আমার এলাকার সব পঞ্চায়েত বিরোধী শূন্য করা।"