বেনিয়মের দোসর শীতের কুয়াশা

মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার অবশ্য বলছেন, ‘‘এক সময় জেলায় বছরে ৪৮৫ জনের মৃত্যু হত। লাগাতার সচেতনতা ও প্রচার চালিয়ে সেই সংখ্যাটা ৩৬৫’তে নামিয়ে আনা গেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:১৬
Share:

কুয়াশা ভেঙে চলাচল জাতীয় সড়কে (বাঁদিকে), রঘুনাথগঞ্জে লেন ভাঙল ট্রাক। ফাইল চিত্র

লেন ভেঙে ছুটছে গাড়ি, হেলমেটহীন মোটরবাইক পাল্টা দিচ্ছে হাওয়ার সঙ্গে, শীর্ণ রাস্তায় উজাড় করা ইমারতী সামগ্রী— যার নিট ফল ক্রমাগত দুর্ঘটনা।

Advertisement

রাস্তা জুড়ে বিকেল থেকে শীতের কুয়াশা সেই আবহে আশঙ্কা ছড়িয়েছে। পুলিশের খতিয়ান বলছে— গত সাত দিনে মুর্শিদাবাদের আনাচ কানাচে এমনই দুঘর্টনায় মারা গিয়েছেন ১৩ জন। ৩০ ডিসেম্বর নিয়ম ভাঙা দিয়ে শুরু হয়েছিল দুর্ঘটনা। সে দিন ফরাক্কার খয়াকান্দিতে ৩৪ জাতীয় সড়কের লেন ভেঙে গাড়ি চালাচ্ছিল একটি তেল বোঝাই ট্যাঙ্কার। উল্টো দিকে থেকে আসা বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় ওই ট্যাঙ্কারের সঙ্গে। মারা যান সাত জন।

সেই থেকে গত ৮ দিনে জেলা জুড়ে পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে ১৩ জন বাসিন্দার। যা পুলিশ থেকে বাস ও লরি মালিকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।

Advertisement

মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার অবশ্য বলছেন, ‘‘এক সময় জেলায় বছরে ৪৮৫ জনের মৃত্যু হত। লাগাতার সচেতনতা ও প্রচার চালিয়ে সেই সংখ্যাটা ৩৬৫’তে নামিয়ে আনা গেছে। ফরাক্কার দুর্ঘটনা বড় হওয়ায় এই ক’দিনে মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা বেশি মনে হয়েছে হয়ত, তবে আমরা দুর্ঘটনা কমাতে আরও পদক্ষেপ করছি। গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি হচ্ছে। চালক থেকে পথচারীদের সচেতনও করা হচ্ছে।’’

জেলা বাস মালিক সমিতির সম্পাদক শ্যামল সাহা বলছেন, ‘‘নিয়ম মেনে গাড়ি চালানোর জন্য চালকদের লাগাতার সচেতন করা হচ্ছে।’’ মুর্শিদাবাদ জেলা ট্রাক অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কুন্তল বাজপেয়ীর কথাতেও সেই এক সুর, ‘‘গত কয়েক দিনে দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আমরা চিন্তিত। এর হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসন থেকে পথচারী, গাড়ির চালক সকলকে সচেতন হতে হবে।’’

মুর্শিদাবাদ জেলার উপর দিয়ে উত্তরবঙ্গে চলে গিয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। রেজিনগর থেকে ফরাক্কা পর্যন্ত প্রায় ১২৫ কিলোমিটার প্রশস্থ জাতীয় সড়ক। এ ছাড়া বহরমপুর কান্দি, বহরমপুর-করিমপুর, বহরমপুর-লালগোলার মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য সড়ক রয়েছে এই জেলায়। এই সব রাস্তায় প্রায় প্রতি দিনই কোথাও না কোথাও দুর্ঘটনা ঘটছে। বেলডাঙা-রেজিনগর এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে ফেলে রাখা ইমারতী সামগ্রীও ওই পথে নিত্য দুর্ঘটনার কারণ বলে মেনে নিচ্ছে পুলিশ। ফরাক্কার ঘটনার পরে রঘুনাথগঞ্জের কুলোরিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস উল্টে ২ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ৩ ডিসেম্বর ইসলামপুরের নসিপুরে ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক সাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়। ৪ ডিসেম্বর হরিহরপাড়ার চোঁয়াতে স্থানীয় রাস্তায় ট্রাক্টরের ধাক্কায় এক মোটরবাইক আরোহীর মৃত্যু হয়। সেই মোটরবাইক আরোহীর মাথায় হেলমেট ছিল না। শনিবার বহরমপুরের ভাকুড়িতে ও হরিহরপাড়ার গজনিপুরে দু’জনের মৃত্যু হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement