নিয়ম রইল খাতায়, পদ্মার ছায়া গঙ্গায়

পদ্মায় ইলিশ ধরার ব্যাপারে বাংলাদেশের ধীবরকুলের সচেতনতার ছিটেফোঁটাও  যে এ বাংলায় নেই তা মেনে নিয়েছে মৎস্য দফতর। অবিকল সেই ছবি ধরা পড়ল ফরাক্কার গঙ্গায়। 

Advertisement

বিমান হাজরা

ফরাক্কা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৯ ০১:২৬
Share:

কারেন্ট জাল।

পদ্মার অনিয়ম গঙ্গায় মিশেছে!

Advertisement

পদ্মায় ইলিশ ধরার ব্যাপারে বাংলাদেশের ধীবরকুলের সচেতনতার ছিটেফোঁটাও যে এ বাংলায় নেই তা মেনে নিয়েছে মৎস্য দফতর। অবিকল সেই ছবি ধরা পড়ল ফরাক্কার গঙ্গায়।

ফরাক্কা-ধুলিয়ান-সুতির হেঁশেলে উঁকি দিলে চোখে পড়ছে রুপোলি শস্যের পাঁচ পদ। কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, সেই চেনা ছবি। আকারের তোয়াক্কা না করে, নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গঙ্গা ঝুড়ে নিষিদ্ধ জালে দেদার ইলিশ ধরছেন মৎস্যজীবীরা।

Advertisement

প্রতি দিন অন্তত এক টন ইলিশ উঠছে নিষিদ্ধ ফাঁস জালে, যার ৭০ শতাংশই ছোট ইলিশ। ডিমপাড়া ও বংশবৃদ্ধির প্রয়োজনে সারা বছর ৯ ইঞ্চির কম দৈর্ঘের ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ, কিন্তু সে কথা শোনে কে!

রাজ্যের পাঁচটি অঞ্চলকে ইলিশের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই পাঁচটি এলাকায় জুন থেকে অগস্ট এবং সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ। ভাগীরথী নদীর লালবাগ থেকে ফরাক্কা ওই পাঁচটি অঞ্চলেই এখন ইলিশ ধরার ধুম। ইলিশের অবাধ বংশ বিস্তারের জন্য ৯০ মিলিমিটারের কম মাপের ফাঁস জাল ব্যবহারও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু গঙ্গা পাড়ে দাঁড়ালে দেখা যাচ্ছে ইলিশ ধরা হচ্ছে সেই নিষিদ্ধ কারেন্ট বা কাপড়া জালে।

মৎস্য দফতরের দাবি, দু’বছর বয়সী একটি ইলিশের ওজন হয় এগারোশো গ্রাম। প্রাপ্তবয়স্ক একটি ইলিশ প্রায় ২২ লক্ষ ডিম পাড়ে। তার অর্ধেক ডিম নিষিক্ত হয়। নিষিক্ত ডিমের ১০ শতাংশ থেকে প্রায় এক লক্ষ পোনা ইলিশ হয়। এক মরসুম পরেই যার ওজন হয় ৫০০-৭০০ গ্রাম। এমনই হিসেব দিচ্ছে মৎস্য বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশ এই কাজটাই সুচারু ভাবে করছে।

২০০৩ সাল থেকেই সেখানে এই নিয়ম চালু হয়েছে। ওই সময়ে বাংলাদেশে ইলিশের উৎপাদন ছিল ১.৯৯ লক্ষ মেট্রিক টন। ২০১৮ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৫.১৭ লক্ষ মেট্রিক টন। আর পশ্চিমবঙ্গে গঙ্গা ও ভাগীরথীতে বছরে ইলিশের উৎপাদন ২০ হাজার টনেই থমকে রয়েছে গত দশ বছর।

মুর্শিদাবাদের মৎস্য দফতরের সহ অধিকর্তা অমলেন্দু বর্মন বলছেন, “ক্রেতারা যদি ছোট ইলিশ না কেনেন তা হলেই মৎস্যজীবীরা সচেতন হবেন। এতে মতস্যজীবীরাই যে উপকৃত হবেন সেটা বুঝেও তারা নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে চলেছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement