পুলিশের ঘেরাটোপে মাধ্যমিক দিলেন ফরাক্কার ছাত্রী। —নিজস্ব চিত্র।
মেয়েকে কিছুতেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে দেবেন না বাবা। তাই শুধু মারধরই নয়, মেয়ে যাতে পরীক্ষায় বসতে না পারে তার জন্য তার অ্যাডমিট কার্ডও লুকিয়ে রেখেছিলেন তিনি। তার মধ্যেই প্রথম পরীক্ষা দিয়েছে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার ওই ছাত্রী। কিন্তু দ্বিতীয় পরীক্ষার আগে আবার কোনও বাধা আসতে পারে বুঝতে পেরে মাকে নিয়ে সোজা থানায় চলে গিয়েছিল মেয়ে। প্রশাসনের সহায়তার শেষমেশ ভালয় ভালয় ইংরেজি পরীক্ষা দিয়েছে ওই পরীক্ষার্থী। তবে এমন একটি ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি ওই ছাত্রী যাতে সবগুলো পরীক্ষা ঠিক ভাবে দিতে পারে তার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদের ইমামনগর হাই স্কুলের ছাত্রী তাহরীমার খাতুনের মাধ্যমিকের পরীক্ষাকেন্দ্র পড়েছে ফরাক্কা অর্জুনপুর হাই স্কুলে। মেয়েটির অভিযোগ, তার বাবা চান না যে সে পড়াশোনা করুক। মেয়েকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে বাধা দেন তিনি। কিন্তু, সে বাবাকে জানায় যে, পরীক্ষা দেবেই। আরও পড়াশোনাও করবে। এ নিয়ে বাড়িতে জোর অশান্তি চলে। তাকে এবং মাকে মারধর করেন বাবা। কোনও উপায়ন্তর না দেখে তাই বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে থানায় এসেছে সে।
তাহরীমার সঙ্গে ছিলেন তার মা। তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন। ওই মহিলার কথায়, ‘‘গত কাল (শুক্রবার) থেকে মেয়েটাকে খুব মারধর করছিল আমার স্বামী। রাতেও ওকে মেরেছে। তার আগে আমায় মারধর করেছে। ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়া জোটে না আমাদের। সেই কষ্টের মধ্যেও মেয়েটা পড়াশোনা করছে। পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু, ওর বাবা কিছুতেই ওকে পরীক্ষা দিতে দিচ্ছিল না। বলছে, ‘পরীক্ষা দিতে যাওয়া যাবে না।’ মেয়ে পরীক্ষা দিতে চাইলে ওকে প্রচুর মারধর করেছে। শেষ পর্যন্ত আমরা পুলিশের দ্বারস্থ হই।’’
শনিবার পুলিশি প্রহরায় ইংরেজি পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরেছে ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। পুলিশ সূত্রে খবর, পরীক্ষার্থীর বাবার সঙ্গে কথাবার্তা বলা হচ্ছে। পাশাপাশি মেয়ের ‘সাহসিকতা’র প্রশংসা করেছে পুলিশ।