তিন টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করে এখন চাষি কিনছেন আশিতে!

কিন্তু কেন এমনটা হল? অতিবৃষ্টির কারণে শীতের আগে পেঁয়াজ চাষ যেমন পিছিয়ে গিয়েছে, তেমনি রফতানি কম হওয়ায় বাজারে পেঁয়াজের চড়া দর।

Advertisement

মফিদুল ইসলাম

হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৫০
Share:

— ফাইল চিত্র

পেঁয়াজ ওঠার সময়ে যে চাষি তিন থেকে সাড়ে টাকা কিলো দরে পেঁয়াজ বিক্রি করেছিলেন, সেই তিনি এখন পেঁয়াজ কিনছেন ৬০-৮০ টাকা কিলো দরে! খোলা বাজারে এখন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কিলো দরে। পেঁয়াজের ঝাঁঝে এখন দিশেহারা জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ।

Advertisement

কিন্তু কেন এমনটা হল? অতিবৃষ্টির কারণে শীতের আগে পেঁয়াজ চাষ যেমন পিছিয়ে গিয়েছে, তেমনি রফতানি কম হওয়ায় বাজারে পেঁয়াজের চড়া দর।

মুর্শিদাবাদ জেলার নওদা এলাকায় সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজের চাষ হয়ে থাকে। কিন্তু হিমঘর না থাকায় উৎপাদনের পরে চাষিরা বাধ্য হন পেঁয়াজ বিক্রি করে দিতে। কারণ পেঁয়াজ সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত গড়ে ওঠেনি।

Advertisement

ফলে গরমের সময়ে তিন থেকে সাড়ে তিন টাকা কিলো দরে পেঁয়াজ বিক্রি করে দিয়েছিলেন চাষিরা। ফড়েরা সেই পেঁয়াজ কম দামে কিনে নিয়ে মজুত করে রেখেছিলেন। এখন সেই পেঁয়াজ বেশি দরে বিক্রি করে মোটা অঙ্কের মুনাফা লুটছেন বলে অভিযোগ পেঁয়াজ চাষিদের। ফলে চাষিরা কার্যত হতাশ।

রাজ্যে সবচেয়ে বেশি নওদা ব্লকে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়ে থাকে। নওদার ত্রিমোহিনী, দুধসর, সর্বাঙ্গপুর, বাগআছাড়া, সাঁকোয়া এলাকায় প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ চাষ হয়ে থাকে। অথচ শুধু ব্লকে নয় গোটা জেলায় কোথাও পেঁয়াজ সংরক্ষণের কোনও ব্যাবস্থা নেই। ফলে চাষিরা কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য হন। সেই পেঁয়াজ কলকাতা-শিলিগুড়ি-সহ ভিন রাজ্যে রফতানি করে একশ্রেণির ফড়ে ও ব্যবসায়ী মুনাফা লুটলেও চাষের খরচ তুলতে হিমশিম অবস্থা চাষিদের। এ বছর পেঁয়াজের বেশি ফলন হওয়া সত্ত্বেও চাষিরা সেই অর্থে দাম পাননি। অথচ কয়েক মাসের ব্যবধানে সেই পেঁয়াজের দাম আকাশছোঁয়া।

ঘরোয়া পদ্ধতিতে বাঁশের মাচা তৈরি করে, ফ্যান চালিয়ে অল্প পরিমাণে পেঁয়াজ সংরক্ষণের চেষ্টা করেন কিছু চাষি। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় সামান্যই। অধিকাংশ চাষির সে পরিস্থিতি নেই। ফলে পেঁয়াজ তিন থেকে ছ’টাকা কিলো দরে বিক্রি করেছেন। এখন সেই পেঁয়াজ তাঁদেরকে কিনতে হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা দরে। ত্রিমোহিনীর চাষি কামাল মণ্ডল বলছেন, ‘‘হিমঘর না থাকায় পেঁয়াজ ওঠার পরে বিক্রি করে দিতে হয়। হিমঘর তৈরি হলে উপকার হবে।’’

জেলা উপ-কৃষি অধিকর্তা তাপস কুমার কুণ্ডু বলেন, ‘‘সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় চাষিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে পেঁয়াজের গোলা তৈরি করে সংরক্ষণ করার চেষ্টা চলছে।’’ মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন বলেন, ‘‘পেঁয়াজ সংরক্ষণের বিষয়ে উদ্যানপালন দফতরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement