বাংলাদেশে আটকে পড়ায় চিন্তিত মুর্শিদাবাদের যুবক নাসিম হাসান বিশ্বাসের মা ও বাবা। —নিজস্ব চিত্র।
ইন্টারনেট বন্ধ। ফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না। সকাল থেকে কয়েকশো বার চেষ্টা করে মাত্র এক বার কথা হয়েছে ছেলের সঙ্গে! ছাত্র আন্দোলনের আঁচ যে তাঁদের ছেলের কলেজেও এসে পড়েছে, তা বিলক্ষণ জানেন বাবা-মা। এ-ও জানেন, ওই কলেজের নিরাপত্তারক্ষীরও প্রাণ গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ছেলেকে কী ভাবে মুর্শিদাবাদের বাড়িতে ফেরানো সম্ভব, সেই চিন্তায় ঘুম উড়েছে পরিবারের।
ডাক্তারি পড়তে গিয়ে বাংলাদেশে আটকে পড়েছেন মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার যুবক নাসিম হাসান বিশ্বাস। ঢাকার ডেল্টা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস করছেন তিনি। পঞ্চমবর্ষের ছাত্র। পরিবার সূত্রে খবর, গত কয়েক দিনে পরিস্থিতি জটিল হওয়ার পর থেকেই নাসিমকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা করছে তারা। কিন্তু না মিলছে উড়ান, না মিলছে বাস! নাসিমের বাবা হাফিজুল ইসলাম বলেন, “ছেলে বলছিল, ওদের কলেজেও অশান্তি হয়েছে। ওদের কলেজেরই নিরাপত্তারক্ষী খুন হয়েছে নাকি! ইন্টারনেট নেই। ফলে ঠিক মতো যোগাযোগও করা যাচ্ছে না। রবিবার রাতের দিকে একটা বিমান রয়েছে। তাতে ছেলে আদৌ বাড়ি ফিরতে পারবে কি না, বুঝতে পারছি না। নাসিমের মা-ও চিন্তা করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’’
বাংলাদেশে আটকে পড়া পড়ুয়াদের দেশে ফেরানোর চেষ্টা করছে বিএসএফ। চালু হয়েছে হেল্পডেক্স। বিএসএফ সূত্রে খবর, আইসিপি পেট্রাপোল, এলসিএস গেদে, ঘোজাডাঙা এবং মাহাদিপুরে পড়ুয়াদের জন্য আলাদা ডেস্ক করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫৭২ ভারতীয় ছাত্র, ১৩৩ নেপালি ও চার ভুটানি পড়ুয়াকে ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বাংলাদেশ বর্ডার ফোর্সের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গের ডিআইজি একে আর্য বলেন, ‘‘রাতেও কোনও শিক্ষার্থীর দল সীমান্তে এলে তাঁদের সাহায্য করা হবে। পেট্রাপোলের ইমিগ্রেশন ডেস্ক এখন সারা দিন-রাত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসএফ। সঙ্গে নিরাপত্তার দিকেও বাড়তি নজর দেওয়া হয়েছে। খোলা হয়েছে মেডিক্যাল ক্যাম্পও। তা ছাড়া ডকুমেন্টেশনে সাহায্য করার জন্য রয়েছে বিশেষ ডেস্কও।’’
মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খান বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকেও জানাব। ছেলেমেয়েরা যাতে ঘরে ফিরতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হবে।”